করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডি থাকে মাত্র তিন মাস?

একবার করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর মানুষ কতদিন সুরক্ষিত থাকে এই প্রশ্ন সবার। এই নিয়ে ই্‌উএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন সেন্টার বলছে, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর মানুষ ৩ মাস ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকে। তিন মাসের মধ্যে তাদের করোনা টেস্ট বা কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।

সিডিসি বলছে, তিনমাসের মধ্যে করোনা থেকে সেরে ওঠা রোগীর কোন লক্ষণ প্রকাশ পাবে না। এই তিন মাস অন্য কারো জন্য সে ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। সিডিসির বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সংক্রমণের তিন মাসের মধ্যে কারো পরীক্ষা জরুরী না যদি না তার মধ্যে করোনা লক্ষণ থাকে।

ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের অধ্যাপক বলছেন, আমি মনে করি তিন মাসের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। তিনি বলেন অ্যান্টিবডিগুলো সুরক্ষার সাথে সম্পর্কযুক্ত তবে আমরা এখনো সত্য জানি না। তবে অ্যান্টিবডি রয়েছে এমন মানুষ কি মাস্ক ছাড়া বাইরে দেখা করতে পারেন? উত্তর হবে না।

আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় দুইটি প্রধান উপাদান রয়েছে।একটি টি সেল আরেকটি বি সেল। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য  এখন পর্যন্ত বি সেলে ফোকাস করা হয়েছে। আন্তজার্তিক গণমাধ্যম সিএনএন এর চিফ মেডিক্যাল করেসপনডেন্ট বলছেন, বি সেল নিজেই অনুলিপি তৈরি করে এবং অ্যান্টিবডিগুলো ছড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এই বিশেষ করোনভাইরাসের অ্যান্টিবডিগুলি খুব দ্রুত শেষ হতে পারে বিশেষত এমন মানুষের মধ্যে, যাদের করোনার হালকা লক্ষণ রয়েছে।

জুনের গবেষণায় দেখা গেছে যাদের করোনা সংক্রমণ রয়েছে তবে লক্ষণ প্রকাশ পায় না তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল। জুলাইয়ের শুরুর  দিকে, একটি স্পেনীয় সরকারী গবেষণায় দেখা গেছে যে স্পেনের মাত্র ৫ শতাংশ মানুষের করোনভাইরাস অ্যান্টিবডি রয়েছে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা মাত্র কয়েক সপ্তাহের পরে হ্রাস পেয়েছে। এতে বোঝা যায় ওইখানের শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে কার্লোস স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের প্রধান ড. রাকেল ইয়োতি বলেন, প্রতিরোধ ক্ষমতা অসম্পূর্ণ, অস্থায়ী এবং তারপরে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। এর অর্থ হলো  টি সেলের মাধ্যমে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, করোনা আক্রান্ত  ব্যক্তিদের মধ্যে এক জাতীয় মেমরি টি সেল পাওয়া গেছে। এর ফলে অনুমান করা যায় যে, কয়েকজনের করেনার হালকা সংক্রমণ হতে পারে কারণ তাদের টি সেলগুলো  অতীতে  ভাইরাসের মুখোমুখি হয়েছিল।

মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং দেখা যায় প্রায় এক বছর যাবত সুরক্ষা দিতে থাকে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ