বুধবার , ৬ নভেম্বর ২০২৪ | ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

কমলা হ্যারিসের বিপর্যয়ের নেপথ্যে ও ডেমোক্রেটদের ভবিষ্যৎ

Paris
নভেম্বর ৬, ২০২৪ ৭:৫৫ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রচারণার শুরুটা ছিল বেশ উচ্ছ্বসিত এবং ব্যাপক আশাব্যঞ্জক। তবে শেষ পর্যন্ত তার প্রচারণার কিছু বড় ভুল ও কৌশলগত ত্রুটির কারণে অবশ্যম্ভাবীভাবে ব্যর্থ হন তিনি।

নির্বাচনী প্রচারণার নানা মোড়ে তার দল তাকে নিয়ে যে প্রত্যাশা করেছিল, তা পূরণ করতে না পারায় শেষ মুহূর্তে অনেক ভোটার এবং সমর্থক আস্থা হারিয়ে ফেলেন।

প্রচারণার সংকট: প্রথম আঘাত

হ্যারিসের প্রচারণার অন্যতম প্রধান ভুল ছিল তার ব্যক্তিগত অবস্থান স্পষ্ট করতে না পারা। ‘দ্য ভিউ’ অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ পর্বে হ্যারিসের পক্ষের কিছু নারীর মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস বিরাজ করছিল। সেই অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নকর্তা জিজ্ঞেস করেন, ‘বিগত চার বছরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতি থেকে ভিন্ন কিছু করার কথা আপনার মনে হয়েছে কিনা?’ এই প্রশ্নের উত্তরে হ্যারিস বলেন, ‘একটি জিনিসও আমার মনে আসে না’।

তার এ ধরনের উত্তর অনেক ডেমোক্রেট সমর্থকের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে এবং প্রশ্ন উঠতে থাকে তার স্বকীয় অবস্থান নিয়ে। যদিও তিনি পরে বলেছিলেন, তিনি তার মন্ত্রিসভায় একজন রিপাবলিকানকে রাখতে চাইবেন। কিন্তু ততক্ষণে তার দলের সহযোগীরা তার সেই মন্তব্যকে সংশোধন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর উত্তর তাকে ভোটারদের কাছে আরও দুর্বল প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করে।

বাইডেনের সঙ্গীর ভূমিকায় দ্বিধাদ্বন্দ্ব

হ্যারিস তার প্রচারণার অনেক অংশে বাইডেন প্রশাসনকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে গিয়ে প্রায়ই দ্বিধায় ভুগেছেন। তিনি তার দলের অন্যদের চেয়ে বাইডেনের বিভিন্ন নীতিমালার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থাকেন। কারণ তিনি হয়তো বিশ্বাস করতেন যে, তা হবে তার প্রতি অবিশ্বস্ততার প্রকাশ।

কিন্তু ভোটারদের একটি বড় অংশ তার কাছ থেকে আরও সরাসরি এবং শক্তিশালী অবস্থান আশা করেছিলেন।

অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দেখা যায়, ভোটারদের বেশিরভাগই মনে করতেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সঠিক পথে নেই। ফলে কমলা হ্যারিসের এমন কোনো ভূমিকা ছিল না, যা তাকে একটি পরিবর্তনের শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করতে পারতো।

অনেক ডেমোক্রেট নেতাই ধারণা করেছিলেন যে, বাইডেন যদি ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিতেন, তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য একটি শক্তিশালী এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রাথমিক নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হতে পারতো।

ভুলের চক্র এবং অভ্যন্তরীণ সংঘাত

কমলা হ্যারিসের প্রচারণার শুরু থেকেই তার দল বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। প্রচারণা পরিচালনা এবং রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে বেশ কিছু উচ্চপদস্থ ডেমোক্রেট উপদেষ্টা ও সহযোগীদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এই অভ্যন্তরীণ সংঘাত প্রচারণার কৌশলগত ভুলগুলোর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়, যা প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে।

ডেমোক্রেট দলের ভেতরে অনেকেই মনে করেন, হ্যারিস যদি পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরোকে তার সহ-প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতেন, তাহলে এই রাজ্যে তার সমর্থন আরও দৃঢ় হতো। শাপিরোর উত্সাহ এবং কৌশলগত ভাবনা তাকে একটি শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করত। তবে হ্যারিস তার স্বতন্ত্র অবস্থান ধরে রাখার জন্য মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজকে বেছে নেন।

ডেমোক্রেটদের ভবিষ্যৎ

এবারের নির্বাচনে হতাশা সত্ত্বেও ডেমোক্রেটদের মনে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, তাদেরকে কৌশলগত পরিকল্পনা এবং নেতৃস্থানীয় প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। আগামী ২০২৮ সালের জন্য তারা এমন একজন প্রার্থী চাচ্ছেন, যিনি জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত এবং নিজের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে সক্ষম।

কমলা হ্যারিসের প্রচারণা যদিও অনেক ত্রুটিতে ভরা ছিল, তা সত্ত্বেও ডেমোক্রেটরা আশা করছেন যে, তারা এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও শক্তিশালী প্রচারণা এবং পরিকল্পনা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।

 

সূত্র: যুগান্তর

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক