কপাল ভালো আমার গলাটা চেনা যায় : আসিফ আকবর

সংগীতাঙ্গনে কপিরাইট নিয়ে চলছে অস্থিরতা। গানে নিজের অধিকার বুঝে নিতে সচেতন হয়েছেন গীতিকার থেকে শুরু করে সব পক্ষ। এক হয়ে গড়ে উঠেছে গীতিকার-সুরকার-শিল্পীদের সংগঠন। সবাই গানের কপিরাইট নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছেন।

তবে এরমধ্যেও নানা পক্ষ-বিপক্ষ দেখা যাচ্ছে। চলছে তর্ক-বিতর্ক। কিছুটা আলো আসে তো একটু পরই দেখা যায় গভীর অন্ধকার। অনেকেই কপিরাইট নিয়ে ধোঁয়াশায় আছেন। অনেকের আছে হতাশাও।

এসব বিষয় নিয়েই সম্প্রতি কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবে সেখানে উঠে এসেছে সংগীতাঙ্গনের সাম্প্রতিক অস্থির অবস্থার চিত্রটাও। তিনি লিখেছেন, ‘কপিরাইট কপিরাইট খেলা আস্তে আস্তে জমে যাচ্ছে। গীতিকার সুরকার শিল্পী কোম্পানীগুলো স্বক্রিয়। স্বার্থের প্রয়োজনে সবাই নতুন কাজের চিন্তা মাথায় না রেখে পুরনো গানের দিকেই মনযোগ দিচ্ছেন যেখান থেকে রেভিনিউ আসবে। এ খাত খোকলা হয়ে গেছে আরো আগেই। তবুও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভাবনা মাথায় রেখে জ্ঞানীগুণীরা সময় দিচ্ছেন সিস্টেম ডেভেলপ করার জন্য। আমিও নাম লিখিয়েছি কন্ঠশিল্পীদের সংগঠনে। নৈতিক সমর্থন অব্যাহত থাকবে যতক্ষন এই সংগঠন স্বচ্ছভাবে চলবে। যদিও জড়াতে চাইনি কোনভাবে। মুরুব্বীদের অনুরোধ কিংবা আদেশ মেনে চলার মানসিকতায় জেল মামলা মাথায় নিয়েই দাঁতে দাঁত চেপে সমর্থন দিয়েছি। আমি জানি আমার ব্যথাটা আমারই থাকবে, থাকুক। তবুও ভাল কিছু হোক।’

তিনি আরও লেখেন, ‘কপিরাইট সিএমও (কালেক্টিভ ম্যানেজমেন্ট অর্গানাইজেশন) খেয়ে ফেলেছিলেন কথিত এক মহিলা মামলাবাজ আইনজীবী। তিনি কপিরাইট অফিসের কেউ না হলেও তারই ছড়ি চলতো সেখানে। সেই মহিলা আবার পুরনো মেথরদের উপদেষ্টা। বাগড়া বাঁধিয়েছে নাগরিক টেলিভিশনের অনুসন্ধানী রিপোর্ট। ওই মহিলা ফিল্ম বা মিউজিক ইন্ডাষ্ট্রীর কেউ না হয়েও ছিলেন সর্বেসর্বা। এদের প্রশ্রয় দেয়া হোয়াইট কালার ক্রিমিনালরা এখন ভোল পাল্টে বাঁচতে চাচ্ছে। পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে ফেসবুক আর নিউজ পোর্টালে খুব মজা হচ্ছে। বুঝে না বুঝে এ্যাকটিভ হয়েছে অহেতুক বাহবা দেয়া ক্ষতিকর গ্রুপটি। সাত মাস আগে কপিরাইট অফিসে একটা শুনানীতে গিয়েছিলাম। আমার বৈধ দাবী এখনো হ্যাং হয়ে আছে, নেপথ্যে সেই মহিলা। তিনিই কপিরাইট দেবী। এখনো বিচার পাইনি, এমনটা হবে আমি জানতাম, তাই পরবর্তীতে আর খোঁজও নেইনি। নিজের কোম্পানীর চৌদ্দ গানের কপিরাইটের সার্টিফিকেট পেয়েছি আবেদনের সাতমাস পর। আমার গাওয়া আড়াই হাজার গান কপিরাইট করতে কত শত বছর লাগতে পারে ক্যালকুলেটরে হিসাব করে নিন সময় থাকলে।’

‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’খ্যাত এ সংগীত সুপারস্টার আরও বলেন, ‘আরো সংঘাত সামনে আসছে। সাউন্ডটেকের দেয়া রেভিনিউ শেয়ারিং অফারে জনৈকরা সাড়া দেয়নি। এককালীন টাকা চায় নগদ, বলে রয়্যালিটি দিয়ে কি হবে! এই হলো আন্দোলনকারীদের একটা প্রাথমিক মানসিকতা, এ দরজা ও দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চিটা গুড়ের ভাগের আশায়। আমি চুপচাপ নিজের মত থেকে দেখছি। ভবিষ্যতের সিনেমা টাইম মেশিনে আগেই দেখা শেষ, সামনে কামড়া কামড়ির বাংলাদেশ।

কপাল ভালো আমার গলাটা চেনা যায়, নইলে এতোদিনে বলেই দিতো আমি কোনো গানই আজ পর্যন্ত গাইনি। সবাই কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বাংলা সংস্কৃতি বলতে এখন বোঝায় পুরনো গানের টাকা উদ্ধার। আমি তাদের মত অতো জ্ঞানীগুণী না হয়েও চেষ্টা করে যাচ্ছি ভাল কিছু গান করার জন্য। মাঠ কাঁপাচ্ছে – বাবু খাইসো!!!’

এদিকে সম্প্রতি আসিফ আকবর দুই বাংলার শ্রোতাপ্রিয় গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও শিল্পী কবির সুমনের লেখা-সুরে বেশ কিছু গান করেছেন। সেগুলো দিয়ে নতুন আঙ্গিকে নিজেকে শ্রোতাদের কাছে হাজির করে প্রশংসা পেয়েছেন তিনি।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ