ঐতিহাসিক জয়ের সঙ্গে মিশে থাকল বাংলাদেশের দুটি রেকর্ড

ইনিংসের প্রথম বলেই অ্যালেক্স ক্যারের উইকেট ভাঙলেন শেখ মেহেদি হাসান, দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে জশ ফিলিপকে মায়াজালে ফেললেন নাসুম আহমেদ, পরের ওভারের প্রথম বলে ময়সেস হেনরিকসকে বোকা বানালেন সাকিব আল হাসান- মাত্র ১১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে অথৈ সাগরে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

সেখান থেকে আর তাদের উঠতে দেয়নি বাংলাদেশ দলের বোলাররা। তিন নম্বরে নামা ইনফর্ম ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শ চেষ্টা করেছেন অনেক, প্রাণপন লড়েছেন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডও। কিন্তু আজকের দিনটি ছিল শুধুই বাংলাদেশের স্পিনারদের। বিশেষ করে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের।

যার স্পিন ঘূর্ণিতে একের পর এক উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইনিংস থেমে গেছে মাত্র ১০৮ রানে। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ২৩ রানের ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ঐতিহাসিক এক জয়ের স্বাদ। তাও কি না মাত্র ১৩১ রানের সংগ্রহ নিয়ে। আর এ জয়ের মাধ্যমে একসঙ্গে দুইটি রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ।

এতদিন ধরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের সবচেয়ে কম রান করে জয়ের রেকর্ড ছিল আরব আমিরাতের বিপক্ষে। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই আমিরাতের বিপক্ষে ১৩৩ রান করেও ৫১ রানের ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ।

আজ অস্ট্রেলিয়ার মতো নামী ও বড় দলের বিপক্ষে সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে গেল টাইগাররা। নাইম শেখ, সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাটে চড়ে ১৩১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে, অসিদেরকে ২৩ রানে হারাল বাংলাদেশ। যা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে কম রান ডিফেন্ড করে জয়ের রেকর্ড।

কাকতালীয় বিষয় হলো, ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে আমিরাতের বিপক্ষে ১৩৩ রান করেও জয় পাওয়া ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেদিন ব্যাট হাতে ২৭ বলে ৩৬* ও বল হাতে ৫ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। আর আজ সেই রেকর্ড ভাঙার দিনে তিনিই দলের অধিনায়ক।

বাংলাদেশের সবচেয়ে কম রান ডিফেন্ড করে জয়ের রেকর্ড

১৩১/৭ – বনাম অস্ট্রেলিয়া, ২০২১ (ঢাকা)
১৩৩/৮ – বনাম আরব আমিরাত, ২০১৬ (ঢাকা)
১৪৬/৬ – বনাম আয়ারল্যান্ড, ২০১২ (বেলফাস্ট)
১৪৭/৭ – বনাম শ্রীলঙ্কা, ২০১৬ (ঢাকা)
১৫৩/৭ – বনাম নেদারল্যান্ডস, ২০১৬ (ধর্মশালা)

এদিকে অস্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টিতেও বাঘের গর্জন শোনানোর দিন আরও একটি রেকর্ড হয়েছে বাংলাদেশের। সেটি কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সবচেয়ে কম রান করে জয়ের রেকর্ড। যা এতদিন ধরে ছিল নিউজিল্যান্ডের দখলে। তা এখন নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ।

২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৪২ রান করেও ম্যাচ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। সেদিন জবাব দিতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করতে পেরেছিল অসিরা। আজ সেটিও করতে পারল না তারা। মাত্র ১৩২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তাদের ইনিংস থেমে গেছে ১০৮ রানে।

বাংলাদেশের এই ইতিহাসগড়া জয়ের মূল নায়ক বাঁহাতি স্পিনার নাসুম। তিনি নিজের ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৯ রান খরচায় নিয়েছেন ৪ উইকেট। যা তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার। এর আগের চার ম্যাচে সাকুল্যে ২ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। আজ অসিদের বিপক্ষে এক ম্যাচেই নিলেন ৪টি।

নাসুমকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন শেখ মেহেদি হাসান, সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামরা। সাকিব ২৪ রানে ১, মেহেদি ২২ রানে ১, শরিফুল ১৯ রানে ২ ও মোস্তাফিজ নিয়েছেন ১৬ রানে ২টি উইকেট। মূলত বোলারদের কাঁধে চড়েই দুর্দান্ত জয়টি পেয়েছে বাংলাদেশ।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ