এসআই হাসান ও এক সাংবাদিক মিলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাল্টায়

সিলেটে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর পর সারা দেশে তোলপাড় শুরু হলে পালিয়ে যান নির্যাতনের মূলহোতা বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই  আকবর হোসেন। এতে সহযোগিতা করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির টু-আইসি এসআই  হাসান উদ্দিন।

এ ঘটনায় এসআই  হাসান উদ্দিনকে বরখাস্ত করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এসএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের জানান, হাসান উদ্দিনকে কড়া পুলিশ প্রহরায় রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তাকে গ্রেফতার করা হবে কিনা- তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের কাছে। গ্রেফতারের বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা চাইলেই এসএমপি তাদের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানান তিনি।

গত ১১ অক্টোবর পুলিশি নির্যাতনে রায়হান নিহতের পর ১২ অক্টোবর পালিয়ে যায় প্রধান সন্দেহভাজন বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর। তার পালিয়ে যাওয়া নিয়ে পরবর্তীতে আরও একটি তদন্ত কমিটি করে এসএমপি।

তদন্ত কমিটির একটি সূত্র জানায়, এসআই হাসান উদ্দিন ও সাংবাদিক নোমান মিলে ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পরিবর্তন করে নতুন হার্ডডিস্ক সংযোজন করে। সাংবাদিক নোমান গ্যালারিয়া শপিং সিটির ফ্রেন্ডস কম্পিউটার নামের এক দোকান থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় ৫০০ গিগাবাইটের একটি হার্ডডিস্ক ক্রয় করে, যার ইনভয়েস নম্বর ২৪৬০২। সেই মার্কেটের সিসি টিভির ফুটেজও সংগ্রহ করে তদন্ত কমিটি। এরপর সেই সাংবাদিক কম্পিউটারের দোকান থেকেই একজনকে নিয়ে যান সেই হার্ডডিস্ক পরিবর্তনের জন্য।

তদন্ত কমিটির মতে, এসআই  হাসান উদ্দিন ওই কাজে সহায়তা করেছেন। এর পাশাপাশি এসআই  হাসান উদ্দিন ঘটনার দিন সেই নোমানের সঙ্গে ৪০ বার এবং এর আগের দিন ১৯ বার কথা বলেছেন। এছাড়া হাসান উদ্দিন ও নোমানের বিরুদ্ধে এসআই আকবরকে পালানোর সহায়তার অভিযোগও পেয়েছে তদন্ত কমিটি। নোমানের অবস্থান নিশ্চিত করতে তার পরিবারের সদস্যদের কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিলেট জেলা পুলিশ ও র‌্যাব। নোমানের শ্বশুর বাড়ী নারায়নগঞ্জে অভিযান চালানো হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সূত্রমতে, ১২ অক্টোবর বিকাল ৩টায় আকবরসহ ৪ জনকে বরখাস্ত করা হয়। বিকাল ৩টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত সে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ছিল। তার অস্ত্র সমঝে নেয় এসআই  হাসান। সেখান থেকেই আকবর পালিয়ে যায়; কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তিনি জানাননি। সূত্র: যুগান্তর