এবারও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেই চার সমস্যা

প্রতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সার্বিক অবস্থা পুনর্মূল্যায়ন করে সংস্থাটির কার্যনির্বাহী সংস্থা ইউরোপীয় কমিশন। এ উপলক্ষে পার্লামেন্টে ভাষণ দিবেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট।

ইউরোপীয় কমিশনের করা এক জরিপ বলছে, এ মুহূর্তে জোটভুক্ত দেশগুলোর সাধারণ মানুষের কাছে যে পাঁচটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো হলো, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড মহামারি, স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সামাজিক অসাম্য।

ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন ইউরোপীয় সংসদে যে ভাষণ দেবেন, সেখানে এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পাওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা। ধারণা করা হচ্ছে, বুধবারের ভাষণে তার মধ্যে চারটি বিষয় খুব গুরুত্ব পাবে।

 

মহামারি

ইউরোপে এখন পর্যাপ্ত কোভিড টিকা রয়েছে। তবে টিকা দেয়ার হার এখনো খুব কম। ৭০ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ককে টিকা দেয়ার লক্ষ্যপূরণ হলেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহতা মাথায় রাখলে এই সাফল্যকে যথেষ্ট বলা যাবে না। টিকা দেয়ার হার অবশ্য ইউরোপের একেক দেশে একেক রকম, কোনো কোনো দেশে মাত্র ২০ ভাগ মানুষ টিকা পেয়েছে এটা যেমন ঠিক, তেমনি মাল্টায় সর্বোচ্চ ৯০ ভাগ মানুষ টিকা পেয়ে গেছে-এটাও সত্যি৷

ইইউর স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিশনার স্টেলা কিরিয়াকিডেস জানান, টিকা দেয়ায় একটি সমন্বিত প্রয়াস চালানো যে দরকার তা ইইউ-ও মনে করে, তাই এ লক্ষ্যে ফন ডেয়ার লাইয়েন ইতোমধ্যে ইউরোপিয়ান হেলথ ইমার্জেন্সি রেসপন্স (এইচইআরএ) নামে একটি এজেন্সি উদ্বোধন করেছেন।

অর্থনীতি

মহামারি ইইউ অঞ্চলের অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব প্রভাব ফেলেছে। ফন ডেয়ার লাইয়েন অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে ওঠার জন্য যথোপযুক্ত পুনর্নিমাণ পরিকল্পনা নিয়েছেন। এর জন্য ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো (৮৮৬ বিলিয়ন ডলার)-এর বাজেট ধরা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন

অর্থনীতি পুনর্নিমাণ বাজেটের বড় একটা অংশ ‘সবুজ’ বিনিয়োগে কাজে লাগাতে চায় ইইউ কমিশন। কমিশন চায়, ইইউর ‘সবুজ চুক্তি’ ২০৫০ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কার্বন নিঃসরণ ছাড়াই ইউরোপকে সবচেয়ে জলবায়ু-নিরপেক্ষ মহাদেশে পরিণত করবে।

সংহতি

ইইউ-এর ভিতরে কিছু ক্ষেত্রে বিরোধটা খুব স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিশেষ করে পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরি সেসব দেশে ইইউ কমিশন এবং ইউরোপীয় আদালতের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়াসের বিরোধিতা করছে ক্রমাগতভাবে। ইইউর নতুন সদস্য দেশগুলোতেও এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এছাড়া অভিবাসন প্রসঙ্গেও ঐকমত্য আসেনি। অথচ এ অঞ্চলে অভিবাসনপ্রত্যাশী বাড়ছে, আগামীতে তার সঙ্গে ব্যাপক হারে যোগ দেবেন আফগানিস্তানের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা।

অথচ কমিশন আগেই জোটভুক্ত সব দেশের মধ্যে অভিবাসনপ্রত্যাশী ভাগ করে দেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশা ছেড়ে দিয়ে সীমান্ত বন্ধ করে অভিবাসনপ্রত্যাশীর আগমন নিয়ন্ত্রণের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।

বুধবারের ভাষণে ফন ডেয়ার লাইয়েন কী বলেন, আর এসব সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার কোনো পরিকল্পনা ঘোষণা করেন কিনা সেটাই এখন দেখার।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন