এখনো বাইডেনকে শুভেচ্ছা জানাননি যে রাষ্ট্র নেতারা

এবারের মার্কিন নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন জো বাইডেন। তবে সরকারিভাবে এখনো ফল ঘোষিত হয়নি। তারপরও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হচ্ছেন, সেটি মোটামুটি পরিষ্কার।

এর মধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সরকার প্রধানরা জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এখনো অভিনন্দন জানাননি।

রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতি বন্ধু হয়েছিলেন যে রাষ্ট্রনেতারা, তাদের অনেকেই এখনো সৌজন্যমূলক শুভেচ্ছাবার্তাটুকুও বাইডেনকে জানাননি।

 

ভ্লাদিমির পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক ভালোই ছিল। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ট্রাম্প কখনো কিছু বলেননি, এমন নয়। কিন্তু সরাসরি পুতিনকে কখনো আক্রমণ করেননি তিনি। পুতিনও ট্রাম্পের বিষয়ে কখনো আক্রমণাত্মক অবস্থান নেননি।

অন্যদিকে জো বাইডেন আগেই বলেছেন, অ্যামেরিকার সব চেয়ে বড় শত্রু রাশিয়া। ফলে ক্ষমতায় এলে রাশিয়ার বিষয়ে বাইডেন যে কড়া হতে পারেন, তা অনেকেই অনুমান করছেন। এই পরিস্থিতিতে বাইডেনকে এ পর্যন্ত শুভেচ্ছা জানাননি পুতিন। ক্রেমলিনের বক্তব্য, সরকারি ভাবে ফলাফল জানার পরেই শুভেচ্ছা জানানো হবে।

‘ট্রাম্পের পতন উদযাপন করছে ইরান’

ইরানের দ্য তেহরান টাইমস মার্কিন নির্বাচন নিয়ে ‘ট্রাম্পের পতন উদযাপন করছে ইরান’ শিরোনামে সংবাদ ছেপেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার বিষয়টি ইরানের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও নতুন প্রেসিডেন্ট তেহরানের প্রতি মার্কিন নীতিতে কতটা পরিবর্তন আনবেন তা নিশ্চিত হতে পারছেন না তারা। ফলে বাইডেনের জয়ের চেয়ে ট্রাম্পের প্রস্থানেই সন্তুষ্ট বেশি তারা৷

জাইয়া বলসোনারো

তাকে বলা হয় লাতিন অ্যামেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের সঙ্গে বরাবরই তার যোগাযোগ ভালো। কাজ কর্মেও তিনি ট্রাম্পের মতোই। অতি ডানপন্থী ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইয়া বলসোনারো এখনো পর্যন্ত বাইডেনকে শুভেচ্ছা জানাননি। বাইডেন যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় বলসোনারোর সঙ্গে তার বিতর্ক হয়েছিল। অ্যামাজন বাঁচানোর বিষয় কড়া পদক্ষেপের কথা বলেছিলেন বাইডেন। বলসোনারো তা উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

শি জিনপিং

২০১৬ সালে ট্রাম্প জেতার পরেই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং। কিন্তু বাইডেনকে এ পর্যন্ত শুভেচ্ছা জানাননি তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে শি জিনপিংয়ের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। বাইডেনের আমলে তার সামান্য উন্নতি হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। কিন্তু চীন কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
বেজিংয়ের বক্তব্য, সরকারি ভাবে ফল ঘোষণার পরেই শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানো হবে। মার্কিন আইনকে ট্রাম্প কী ভাবে ব্যবহার করেন, সে দিকে বেজিং লক্ষ্য রেখেছে।

কিম জং উন

বাকি বিশ্বের সঙ্গে তাঁর বিশেষ যোগাযোগ নেই। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে কিম জং উন বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন এখনো শুভেচ্ছা জানাননি বাইডেনকে। তবে ২০১৬ সালে ট্রাম্প জেতার দুই দিনের মধ্যে তাঁর কাছে বার্তা পাঠিয়েছিলেন কিম জং উন।

হানেজ হানসা

স্লোভানিয়ার প্রধানমন্ত্রী হানেজ হানসা আরও এক কাঠি ওপরে। বাইডেন নয়, ট্রাম্পকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। মার্কিন ভোট গণনা চলাকালীনই ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। ট্রাম্প ভোট কারচুপির যা যা অভিযোগ করছেন, স্লোভানিয়ার প্রধানমন্ত্রীও সেই একই অভিযোগ করেছেন। সরাসরি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পই তাঁর পছন্দ।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বাইডেন এবং কমলা হ্যারিস দুইজনকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভালো ফলের জন্য। কিন্তু সেখানে কোথাও তিনি পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট শব্দটি লেখেননি। নেতানিয়াহু প্রকাশ্যেই বলেন, তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। শুভেচ্ছাবার্তাতেও তিনি লিখেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কত বন্ধুত্ব।

 

 

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন