এখনো নিশ্চুপ না থেকে আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হই: মির্জা ফখরুল

টিকা নিয়ে সরকারের কোনো রোডম্যাপ নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, টিকা সাধারণ মানুষ পাবে কি না- তারও কোনো রোডম্যাপ নেই। তারা বলছে, আগে ২০ লাখ আসবে। এই টিকা কারা পাবে সেটাও আমরা জানি না। প্রতি মাসে নাকি ৫০ লাখ করে আসবে, সেটা কারা পাবে তাও জানি না। যারা সাধারণ মানুষ আমরা কখন পাব, না পাব তার কোনো নিশ্চয়তা এখানে নেই।

বুধবার বিকালে রাজধানীর সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভা হয়।

বেসরকারিভাবে সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে তিন কোটি ডোজ টিকা ক্রয় করছে তার দাম নিয়েও প্রশ্ন তুলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, টিকা যেটা দিলে মানুষের জীবন রক্ষা হবে, মানুষ বাঁচবে- তা নিয়েও সরকার লুটপাট শুরু করেছে। অনেক বেশি দাম দিয়ে ভারতের কাছ থেকে এই টিকা কিনছে। যার কোনো নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি।

করোনা সংক্রামণের পর থেকে সরকারের দুর্নীতির কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এই করোনা নিয়েও এরা চুরি করছে, ডাকাতি করছে, লুটপাট করছে। প্রথম দিকে করল করোনা টেস্ট নিয়ে। ওই টেস্ট নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতাল, ডা. সাবরিনাসহ অনেকে লুটপাট করল।

খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আজকে বন্দি। কেন? তিনি গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ, তা বাস্তবায়িত করার জন্য, তার ১৯ দফা কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান যিনি অল্প বয়সে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, ৫শ’র উপরে নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে, হাজার হাজার নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এজন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে ওদের (আওয়ামী লীগ) সফলতা হচ্ছে যে, আজকে জনগণের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। তারা মানুষকে সত্যিকার অর্থে শৃঙ্খলিত করেছে, বন্দি করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে এই যে শৃঙ্খলিত অবস্থায় রাখা হয়েছে সেজন্য আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান থাকবে, আপনারা সবাই এখনো নিশ্চুপ না থেকে আসুন- আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং বাংলাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করি। এই যে ভয়াবহ দানব আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে, তা সরিয়ে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমরা প্রতিষ্ঠা করি।

স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারীর সহধর্মিণী বিথীকা বিনতে হোসেইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী প্রমুখ।

 

সুত্রঃযুগান্তর