এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা

উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। পূর্ব নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই মাস হতে চললেও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার। তবে পরিকল্পনা তৈরির জন্য একটি কমিটি কাজ করছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী গত এক এপ্রিল বাংলাদেশে উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা (এইচএসসি) শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ২২ মার্চ তা স্থগিত করে সরকার। এরপর মহামারির প্রকোপ বেড়েছে। সাধারণ ছুটির পর অফিস-ব্যবসা-যানবাহনসহ সব খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয়েছে ৬ আগস্ট পর্যন্ত।

এখন এইচএসসি পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে কিংবা চলতি বছর আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ঢাকার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি মাধ্যমের ডে শিফটের কো অর্ডিনেটর এ এস এম মাসুদ জানান, এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে এই বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা এখনও তারা পাইনি। শুনেছি এবারের বছরের সেশনটা আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেনে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু কোনো অফিসিয়াল নোটিস এখনো পাইনি। আমাদেরকে অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মার্চে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রিটেস্ট পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সেটাও আমরা নিতে পারিনি। অন্যদিকে প্রথম বর্ষে যারা রয়েছে সমাপনী পরীক্ষা ছাড়াই অনলাইনে তাদের দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস শুরু করে দিতে হয়েছে।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা দেয়নি সরকার। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কিংবা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটেও এনিয়ে কোনো তথ্য নেই। এইচএসসি পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পৌঁছাতে পারছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, বিশেষজ্ঞ কিংবা সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে তারা বলছেন বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত  করোনা পিক পর্যায়ে যায়নি। যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে আমরা পরীক্ষা নেব কিভাবে? পরিস্থিতি কিছুটা প্রশমিত হলে আমাদের যে লোকবল আছে সে অনুযায়ী কী পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিব সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। তবে যখনই সিদ্ধান্ত নেয়া হোক পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির জন্য অন্তত মাসখানেক সময় দেয়া হবে।

এদিকে করোনার কারণে বর্তমান এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল এবং শিক্ষার্থীদের পাস ঘোষণা করা হতে পারে বলে গুজব ছড়িয়েছে। বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি এটা একেবারে ভুল কথা। এভাবে অটো পাস দিয়ে আমাদের লাভ কী, আমি তো আমার ভবিষ্যত প্রজন্মকে এতে নষ্ট করে দেব।

গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা নেয়ার সমস্ত প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। পরিবেশ উপযুক্ত হলেই পরীক্ষা নেওয়া হবে।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ