উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম, শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা না করা, একসঙ্গে দুটি বাসা ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।

বাকৃবিতে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের দুটি কমিটি রয়েছে। এক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এমএএম ইয়াহিয়া খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলাম সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় ওই কমিটির অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে ড. পূর্বা ইসলাম বলেন, ৩ বছর ধরে উপাচার্যের পছন্দের গুটিকয়েক ব্যক্তি প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো দখল করে রেখেছেন। তারা অসৎ ও আদর্শহীন ব্যক্তি দ্বারা প্রশাসন পরিচালনা করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ব্যর্থতায় দীর্ঘ সেশনজট সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনিক ঢিলামির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ জন পিএইচডি শিক্ষার্থীকে সব প্রক্রিয়া শেষ করার পরও ডিগ্রি অর্জন করতে প্রায় দেড় বছর বসে থাকতে হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে এ বছর চরম অরাজকতা হয়েছে। বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি ছাড়াই শিক্ষক বদলি, একই ব্যক্তিকে একাধিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া, এমনকি বাছাই কমিটির আপত্তি সত্ত্বেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ড. ইয়াহিয়া বলেন, নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই উপাচার্য নিজের নামে বরাদ্দ করা বাসভবন ছাড়াও আগের বাসাটিও একই সঙ্গে ব্যবহার করে আসছেন। একই সঙ্গে দুটি বাসা ব্যবহার করা নিয়মবহির্ভূত। এছাড়াও উপাচার্য কাগজেকলমে নানা ধরনের কাজের অজুহাতে প্রায় সময় ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়নের জন্য ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজালের (ডিপিপি) কাছ থেকে ২০১৮ সালে ৬৫৯ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে উপাচার্যের ব্যর্থতায় প্রকল্পের ৩ বছর মেয়াদকালে কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। মোট অর্থের মাত্র ৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের দীর্ঘসূত্রতার কারণে বাকি টাকা ফেরত চলে গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, একটি তদন্ত কমিটি ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে দেখেছে উপাচার্যের বাসভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। আমি ও আমার পরিবার পুরোনো বাসায় থাকি। আমরা কেউই ওই বাসায় থাকি না। শিগগিরই বাসভবন সংস্কার করা হবে। ডিপিপির বিষয়ে বলেন, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের টাকাটি ফেরত যায়নি। ক্যাম্পাসে অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মিটিং ব্যতীত কখনো ক্যাম্পাসের বাইরে যাই না।

ৎবাসা বরাদ্দে অনিয়মের বিষয়ে বলেন, এগুলোর আলাদা কমিটি আছে, তারা দেখবে বিষয়গুলো। বিচারহীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, এই সব বিষয়ে আলাদা কমিটি আছে। কমিটি কাজ করছে। শিক্ষকদের বিভক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি দুই পক্ষের সঙ্গে পাঁচবার বসে আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনো সমঝোতা হয়নি। নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে নিজেরাই বিভক্ত হয়েছে। আর নিয়োগ ও বদলি নিয়ম মেনেই হয়েছে। আমার কোনো আত্মীয়স্বজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দিইনি।

সূত্র: যুগান্তর