সিল্কসিটিনিউজ ক্রীড়া ডেস্ক:
ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং বাবর আজমের, ক্যারিয়ার সেরা বোলিং মোহাম্মদ নওয়াজের – এই দুই জনে ভর করে প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সহজেই হারিয়েছে আজহার আলির দল। নিজেদের চেনা পরিবেশে স্বরূপে ফেরার আভাস দিয়েছে সর্বশেষ সিরিজে ইংল্যান্ডের কাছে বিধস্ত পাকিস্তান।
ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ১১১ রানের এই জয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে ম্যাচ জয়ের দিক থেকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে (৪৫৪) ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তান (৪৫৫)। এই সংস্করণে তাদের চেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছে কেবল অস্ট্রেলিয়া (৫৪৭)।
পাকিস্তানের ইনিংসের ৪৫তম ওভারে ফ্লাডলাইট বিভ্রাটে এক ঘণ্টার বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ৪৯ ওভারে।
শুক্রবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৮৪ রান করে পাকিস্তান। ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮৭ রান। জবাবে ৩৮ ওভার ৪ বলে ১৭৫ রানে অলআউট হয়ে যায় জেসন হোল্ডারের দল।
লক্ষ্য তাড়ায় কখনও নিজেদের ভিত দৃঢ় করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অষ্টম ওভারে জনসন চার্লসকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ আমির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিক হারানোর শুরুও তখনই।
পাকিস্তানের বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে যা একটু প্রতিরোধ গড়েছিলেন মারলন স্যামুয়েলস। ৪৬ রান করে তিনিও ওয়াহাব রিয়াজের বলে বোল্ড হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড় হার নিশ্চিত হয়ে যায়।
নওয়াজের স্পিনে ফিরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার ব্যাটসম্যান- ড্যারেন ব্রাভো, দিনেশ রামদিন, কাইরন পোলার্ড ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েইট।
শেষ দিকে হাসান আলি দ্রুত সুনিল নারাইন ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের সহজ জয় নিশ্চিত করেন।
বাঁহাতি স্পিনার নওয়াজ ৪২ রানে নেন ৪ উইকেট। পেসার হাসান তিন উইকেট নেন ১৪ রানে।
এর আগে প্রথম বলেই পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার আলিকে ফিরিয়ে দেন গ্যাব্রিয়েল। শুরুর এই সাফল্যের সুবিধা নিতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাবরের সঙ্গে ৮২ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন শারজিল খান।
স্পিনার সুলেমান বেনের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৬টি ছক্কা ও তিনটি চারে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন শারজিল। আরেক স্পিনার নারাইন ফেরান শোয়েব মালিককে।
সরফরাজ আহমেদের সঙ্গে বাবরের ৯৯ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। বাবরকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে যাওয়া সরফরাজের ৪৫ বলে খেলা ৩৫ রানের ইনিংসে মাত্র একটি চার।
প্রান্ত বদল করে খেলা বাবর সুযোগ পেলেই চড়াও হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের ওপর। দ্বিতীয় বলেই ক্রিজে আসা এই ব্যাটসম্যান ১৩১ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় খেলেন ১২০ রানের চমৎকার এক ইনিংস। ক্যারিয়ারে প্রথম শতক পাওয়া এই ব্যাটসম্যানের আগের সর্বোচ্চ ছিল ৮৩।
শেষের দিকে ইমাদ ওয়াসিম ও নওয়াজ দলকে তিনশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কার্লোস ব্র্যাথওয়েইট ৫৪ রানে নেন তিন উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৪৯ ওভারে ২৮৪/৯ (আজহার ০, শারজিল ৫৪, মালিক ৬, সরফরাজ ৩৫, রিজওয়ান ১১, ইমাদ ২৪, নওয়াজ ১৯, ওয়াহাব ০, আমির ৩*, হাসান ২*; কার্লোস ব্র্যাথওয়েইট ৩/৫৪, হোল্ডার ১/৩৫, বেন ১/৪৬, গ্যাব্রিয়েল ১/৫৩, নারাইন ১/৫৮)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৮.৪ ওভারে ১৭৫ (লক্ষ্য ৪৯ ওভারে ২৮৭) (চার্লস ২০, ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েইট ১৪, ব্রাভো ১২, স্যামুয়েলস ৪৬, রামদিন ৮, পোলার্ড ৯, হোল্ডার ১, কার্লোস ব্র্যাথওয়েইট ১৫, নারাইন ২৩, বেন ১৬*, গ্যাব্রিয়েল ২; নওয়াজ ৪/৪২, হাসান ৩/১৪, আমির ১/২১, ওয়াহাব ১/২৭, ইমাদ ১/৩৬ )
ফল: পাকিস্তান ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ১১১ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বাবর আজম।
সূত্র: বিডি নিউজ