ঈদের আগে খুলছে না নিউ মার্কেট

মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এরই মধ্যে আগামী ১০ মে থেকে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে চলমান এ পরিস্থিতিতে ঈদের আগ পর্যন্ত নিউ মার্কেট বন্ধ থাকবে— এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম (শাহিন) শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, রোজায় না খোলার সিদ্ধান্ত নেয় দেশের অন্যতম সেরা শপিংমল বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ও যমুনা ফিউচার পার্ক। এই দুই জায়ান্ট শপিংমলের এমন সিদ্ধান্তের পর নিরাপত্তার স্বার্থে বায়তুল মোকাররম মার্কেট কর্তৃপক্ষও ঈদের আগ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

কিন্তু নিউ মার্কেট খোলা, না খোলা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ছিলেন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এনিয়ে গত তিনদিনে তারা নিজেদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক করেন। সর্বশেষ শুক্রবারের বৈঠকে মার্কেট না খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম বলেন, মার্কেট খুললে তাদের নিজেদের স্বাস্থ্যগত যেমন ঝুঁকি রয়েছে তেমনি সরকার মার্কেট খুলতে যেসব শর্ত দিয়েছে সেসব নির্দেশনা মেনে খোলা সম্ভব নয়। তাই মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে তারা ঈদের আগে মার্কেট খুলবেন না।

গত সোমবার (৪ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দোকান ও শপিংমল আগামী ১০ মে থেকে খোলার কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। সেখানে বিকেল ৪টার মধ্যে তা বন্ধের কথাও উল্লেখ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, কোভিড-১৯ রোগের বিস্তাররোধ এবং পরিস্থিতির উন্নয়নের লক্ষ্যে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার আগামী ৭ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি/জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা/সীমিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে শর্তাদি বিবেচনা করে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট, শপিংমলসহ অন্যান্য কার্যাবলি ১০ মে থেকে সীমিত আকারে খুলে দেয়ার ব্যবস্থার অনুরোধ জানানো হলো। তবে এক্ষেত্রে আন্তঃজেলা ও আন্তঃউপজেলা যোগাযোগ/চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

হাট-বাজার, ব্যবসাকেন্দ্র, দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টায় খুলবে এবং বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত সতর্কতা গ্রহণের কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার ক্রেতার নিজ এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত শপিংমলে কেনাকাটা করতে নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এতে বলা হয়, প্রত্যেক ক্রেতাকে নিজ পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স) ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা মহানগরীতে শপিংমল ও মার্কেট খোলা রাখার বিষয়ে ১৪টি নির্দেশনা দেয় ডিএমপি।