ঈদুল আজহায় নগরবাসীর নিরাপত্তায় এসএমপির ১৭ নির্দেশনা

আগামী ১ আগস্ট দেশব্যাপী পালিত হবে মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এ লক্ষে ইতোমধ্যে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। মহামারী করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে জোর দিয়েই চলছে সব কাজ।

ব্যতিক্রম নয় সিলেটেও। তাই সিলেটে ঈদুল আজহাকে নিরবচ্ছিন্ন, নিরাপদ করতে ও জনসাধারণের সুবিধার্থে বেশ কিছু নির্দেশনা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)।

মঙ্গলবার বিকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ট্রাফিক ও অতিরিক্ত দায়িত্বে গণমাধ্যম) স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মহামারী করোনা থেকে নিরাপদ থাকতে ও ঈদের কেনাকাটা এবং কোরবানির পশুর হাটে নিরাপদ থাকতে ১৭টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হল-
১. ঈদের জামাতে যাওয়ার সময় নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন বহন করার ক্ষেত্রে সর্তক থাকুন। ঈদের জামাতে যাওয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করুন, মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। নিজ নিজ বাসস্থান থেকে অজু করে মসজিদে যাবেন।

২. করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

৩. ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন এবং বহনে সর্বদা সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে অর্থ স্থানান্তরে পুলিশের সহায়তা নিন।

৪. মোবাইল ফোনভিত্তিক আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান (যেমন বিকাশ, ইউক্যাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি) ব্যবহার করার ক্ষেত্রে প্রতারক চক্র হতে সর্বদা সজাগ থাকুন।

৫. মাস্ক, পিপিই পরে চুরি, ডাকাতি রোধে পুলিশ পরিচয়ে বা অপরিচিত কাউকে বাসায় প্রবেশ করতে দিবেন না।

৬. কোরবানির পশু সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে এবং ইউনিয়ন এলাকায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে জবাই করার জন্য অনুরোধ করা হল। পশু জবাইয়ের বর্জ্য নিদিষ্ট জায়গায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হল। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পশু জবাইয়ের অস্থায়ী স্থান সম্পর্কে জানার জন্য অনুরোধ করা গেল।

৭. প্রতিটি পশুর হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণে ব্যাংক কর্তৃক স্থাপিত বুথে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন দ্বারা টাকা পরীক্ষা করার অনুরোধ করা হল।

৮. ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। যানজট নিরসনে ব্যক্তিগত গাড়ি মসজিদ হতে দূরে পার্কিংয়ের স্থানে রাখুন।

৯. ঈদ উপলক্ষে বাসা/বাড়িতে গৃহকর্মী নিযুক্ত করলে তাদের প্রতি বিশেষ নজর রাখুন। বাসা ছেড়ে যাওয়ার আগে ফ্রিজ বন্ধ রাখুন। বালতি, গামলা, বদনা ইত্যাদি পানি শূন্য করে উপুড় করে রাখুন ও ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে সহযোগিতা করুন।

১০. ঈদ উপলক্ষে ছুটিতে গেলে বা বাসা ত্যাগ করলে আপনার বাসার দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালাবন্ধ করুন, আপনার বাসা/ অফিসে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ব্যবহার করুন, দরজায় নিরাপত্তা এলার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করুন, মহল্লা ও বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে/ দুষ্কৃতকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানা পুলিশকে অবহিত করুন।

১১. ঈদের আগে/পরে সময় নিয়ে ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। শেষ মুহূর্তে ট্রেন ও বাসের মারাত্মক ভিড় এড়িয়ে চলুন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে ট্রেন ও বাসে চলাচল করবেন না। যাত্রী সাধারণকে ট্রেন ও বাসের ছাদে এবং ট্রাকে করে ভ্রমণ না করার জন্য অনুরোধ করা হল।

১২. পুরুষ ও নারী পকেটমার এবং প্রতারক চক্র হতে সর্তক থাকুন। বাস টার্মিনালসমূহে- রাস্তায় ও হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাগণ কোনো অপরিচিত ব্যক্তি, অজ্ঞান পার্টির নিকট হতে কোনো খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করবেন না।

১৩. রাতকালে জনবহুল রাস্তা দিয়ে চলাচল করার চেষ্টা করুন। রাস্তায় চলাচলের সময় সঙ্গে থাকা মূল্যবান সামগ্রী বা টাকা-পয়সা সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং মধ্য কিংবা শেষ রাতে বাসস্ট্যান্ডে নামলে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করুন, প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন।

১৪. ট্যাক্সি বা অটোরিকশা বা ভাড়ায় চালিত অন্যান্য গাড়ি ভাড়া করার সময় গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং ড্রাইভারের নাম, ঠিকানা লিখে নিন। প্রয়োজনে উক্ত রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও ড্রাইভারের নাম, ঠিকানা নিকটজনের নম্বরে এসএমএস করুন।

১৫. সিএনজিতে পূর্ব থেকে অপরিচিত যাত্রী বসা থাকলে তা এড়িয়ে চলুন। সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী থেকে সতর্ক থাকুন।

১৬. দোকান মালিকগণ মার্কেট/শপিংমলে কোনো নগদ অর্থ রাখবেন না, মার্কেট/শপিংমল ত্যাগের পূর্বে অবশ্যই নিশ্চিত হোন যে, আপনার প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে তালাবন্ধ করা হয়েছে, মালিক পক্ষ স্ব-স্ব মার্কেট/শপিংমলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করুন।

১৭. সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি বা বস্তু প্রত্যক্ষ করলে অথবা আপনার যে কোনো মতামত/ অভিমত/ অভিযোগ জানাতে নিম্নেবর্ণিত নাম্বারসমূহে অবহিত করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।

উল্লেখিত এ সব নির্দেশনার পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা বহনে বা যে কোনো ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতা নেয়ার কথা বলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণের জন্য বেশ কয়েকটি মোবাইল নম্বর উন্মুক্ত করা হয়েছে।