ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি আল আকসার সঙ্গে আমিরাতের বিশ্বাসঘাতকতা: আব্বাস

ইসরাইলের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই)চুক্তিকে জেরুজালেম ও আল আকসা মসজিদের সঙ্গে দেশটির ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিন।

একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই ইসরাইল-আমিরাত চুক্তিকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বলেও মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

ফিলিস্তিন টিভিতে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ এক বিবৃতিতে বলেন, এই পদক্ষেপকে আরব শান্তি উদ্যোগ এবং আরব ও ইসলামিক সম্মেলনে নেয়া সিদ্ধান্তের প্রতি আঘাত, একইসঙ্গে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবেই দেখছে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব।

‘লজ্জাজনক’ এই চুক্তি থেকে আমিরাতকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব বলেছে, আমিরাত যা করছে, সেটা ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব প্রত্যাখ্যান করছে এবং এটাকে জেরুজালেম, আল-আকসা মসজিদ এবং ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছে।

বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরাইল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই চুক্তির ফলে ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরের দখলি পরিকল্পনা বন্ধ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান এক যৌথ বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেছেন যে, এই চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বয়ে আনবে। এতে করে একটি নতুন দিশা দেখাবে যা এই অঞ্চলে দুর্দান্ত সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদিনেহ বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি আমাদের অবাক করেছে, এ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা জানায় ফিলিস্তিন। তবে অন্যান্য আরব দেশ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে।

মাহমুদ আব্বাসের বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে ভ্রাতৃপ্রতিম আরব দেশগুলোর নতিস্বীকার, আমিরাতের পদাঙ্ক অনুসরণ এবং ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়।

এতে বলা হয়, আমিরাত কিংবা অন্য কোনো পক্ষের ফিলিস্তিনিদের হয়ে কথা বলার কোনো অধিকার নেই। ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ অথবা নিজেদের মাতৃভূমিতে তাদের বৈধ অধিকার নিয়ে তাদের হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি অনুমোদন করবে না ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব।

এমন মারাত্মক পরিস্থিতিতে ইসরাইল-আমিরাত চুক্তি প্রত্যাখ্যান করতে আরব লীগ ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসির জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব।

ইসরাইলের সঙ্গে এতদিন পর্যন্ত কোনো উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। বিগত বছরগুলোতে ইসরাইলের গোপনে সম্পর্ক বজায় রাখলেও এখন সেটাকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে যাচ্ছে আমিরাত।

 

সূত্রঃ যুগান্তর