ইবির ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পে পড়েছে শকুনের চোখ!

আশিক বনি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পের ৫৩৭ কোটি টাকায় শকুনের চোখ পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এ প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করতে শকুনের মত লেগে আছে একটি গ্রুপ। শনিবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদত্যাগের পর গ্রুপটি আরো বেশি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।

এ গ্রুপটির নেপথ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়ার এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাবশালী শিক্ষক। তবে এর সাথে আরো বেশ কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তাও রয়েছেন এর নেপথ্যে। তাদের একমাত্র লক্ষ কিভাবে এ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা ও লুটপাট করা যায়। এজন্য তারা বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যলয়ের উপাচার্যকে চাপ প্রয়োগ ও জিম্মী করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছেন। প্রভাবশালী এ গ্রুপটি বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন ও পদ না পাওয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দিয়ে বিভিন্নভাবে আন্দোলন করিয়েছেন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি দীর্ঘ আট মাস স্থগিত থাকার পর গত ১৪ জুলাই মধ্যরাতে নতুন কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে রবিউল ইসলাম পলাশকে সভাপতি ও রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সম্পাদক করা হয়। সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর এ কমিটিকে মেনে নিতে পারেনি ক্যাম্পাসের স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা।

রবিবার সকাল ১০টায় মিছিল করেছে ছাত্রলীগের পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা। এ সময় মিছিলে বহিরাগত ও মাদকাশক্তদের দেখা যায়। মিছিলের নেতৃত্ব দেয় শিশির ইসলাম বাবু, মিজানুর রহমান লালন, ফয়সাল সিদ্দিকী আরফাতসহ অনেকেই। বাবু ২০১৩-১৪ (মাস্টার্স) অথচ সে এখনো ক্যম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। লালনের এলাকায় তাকে কেও মূল্যায়ন করে না বলে জন¯্রুতি রয়েছে। আরাফাত মন্দির ভাংচুরের ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার হয়েছিল। মিছিল থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইবি শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কটুক্তিমুলক স্লোগান দেয়।

বর্তমান উপাচার্য ড. আসকারী দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে একাডেমিক, প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সেশনজট মুক্ত হয়েছে। বিদেশী ছাত্র ভর্তি ও দেশের বাইরের বিশ^বিদ্যালয়গুলোর সাথে প্রতিনিয়ত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মাধ্যমে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় আন্তর্জাতিকীকরনের দিকে এগিয়ে চলেছে। এসময় প্রশাসনকে বিপদে ফেলে বা জিম্মী করে বিশেষ একটি মহল লুট-পাটের রাজনীতি নিয়ে ব্যাস্ত।

এ বিষয়ে উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী বলেন, সরকারি নীতিমালার আলোকে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রনালয়, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ প্রশাসনের নিকট লিখিত ভাবে সহযোগীতা চেয়েছি। আমার ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট সকলেরসহ পুলিশ প্রশাসন, গোয়েন্দা বিভাগ ও সরকারের উচ্চ মহলের সর্বোচ্চ সহযোগীতার মাধ্যমে এ কাজ সম্পন্ন করতে চাই।

প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. রেজওয়ানুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ সঠিকভাবে পরিচালনা জন্য সকলকে সহযোগীতা করতে হবে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে সকলে সহযোগীতা করলে বিশ্ববিদ্যালয় আরো ভাল অবস্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ছাত্রলীগ সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোন অন্যায়কে প্রতিহত করতে ছাত্রলীগ সদা তৎপর রয়েছে।