ইবিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত সভা পণ্ড করল বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা

ইবি প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত সভা পন্ড করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে বহিরাগত শিশির ইসলাম বাবু। এসময় উপাচার্যকে ক্যাম্পাস অচল করে দেওয়ার হুমকি দেয় সে।

বুধবার বেলা ১২টায় উপাচার্যের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশিত ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদনা চুক্তি’ বিষয়ে সভা চলছিল। এসময় শিশির ইসলাম বাবু ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী নিয়ে প্রবেশ করে।

সেখানে উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ ছাত্রলীগ কর্মীদের সভা চলাকালে কথা না বলে পরে আসতে বলেন। ওই সময় উত্তেজিত বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা উপাচার্যকে শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব কে বহিস্কার করতে চাপ প্রয়োগ করে। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে রাকিবের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা না নিলে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেওয়ার হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সরওয়ার মুর্শেদসহ শিক্ষকবৃন্দ ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে তৎক্ষনাত প্রতিবাদ স্বরুপ বক্তব্য বন্ধ করে সভাস্থল ত্যাগ করেন। বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতার এমন অসৌজন্যমূলক আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।

কে এই বাবু?
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৩-১৪ (মাস্টার্স) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিশির ইসলাম বাবু। এক সময় ক্যাম্পাসের ত্রাস ছিল এই শিশির ইসলাম বাবু। ক্যম্পাসে অস্ত্রের মহড়া, ভর্তি বাণিজ্য ও হল ডাইনিং এ টাকা না দিয়ে খাওয়া, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দলীয় প্রভাবে মারধরসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতার বিরেুদ্ধে।

কয়েক বছর আগে প্রশাসন ভবনের সামনে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক শিক্ষার্থীর পায়ে আগ্নেয়অস্ত্র দিয়ে গুলি করেছিল সে। এছাড়াও তার এক আত্মীয়কে অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তি করতে অন্ত্র ধরে তার আগের তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীর সকল কাগজ-পত্র কেড়ে নিয়ে সেই আত্মীয়কে ভর্তি করে শিশির ইসলাম বাবু।

এবিষয়ে জানতে চাইলে হুমকির বিষয়টি স্বীকার করে বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা শিশির ইসলাম বাবু বলেন, ভিসি স্যার জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলনে মাঠে থাকবে। তখন তিনি কিভাবে ক্যাম্পাস চালাবেন?

প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত বার্ষিক কর্মসম্পদান চুক্তির মত একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় এমন আচরন অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা খুবই মর্মাহত হয়েছি।
কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সরওয়ার মুর্শেদ বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত, ব্যর্থ। একজন শিক্ষার্থী কিভাবে শিক্ষকদের সভায় প্রবেশ করে ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতে পারে?

বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশিত গুরুত্বপূর্ণ সভায় বিনা অনুমতিতে দল-বল নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করা কোন ভাবেই ভদ্রতার মধ্যে পড়ে না। আমি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষার্থী সূলভ আচরণ প্রত্যাশা করি। ইবি ছাত্রলীগকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিৎ।