ইবিতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আবদ্ধ কক্ষে পরীক্ষা গ্রহণ: তদন্ত কমিটি গঠন

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদুর রহমান টিটু নিয়ম বহির্ভূতভবে সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থীকে ৩টি কোর্সের পরীক্ষা আবদ্ধ কক্ষে একই সাথে গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান ও কাজী আখতার হোসেন। একই সাথে তাকে সান্ধ্যকালীন কোর্সের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আগমী ৭ কার্যদিবসের বর্ণিত অপরাধের কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা মর্মে নোটিশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে একই অনুষদের আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ওহাব শাহীন মাত্র দুই ঘন্টায় ৮ টি ইনকোর্স পরীক্ষা গ্রহণ করার ঘটনা ফাঁস হওয়ায় রীতিমত সমালোচনার ঝড় উঠেছে ক্যাম্পাস জুড়ে।

বিভিন্ন সময় একাডেমিক আইনের বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনার শিরোনাম হয়েছেন আল-ফিকহ এ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ারুল ওহাব শাহীন। একাডেমিক পরীক্ষায় খাতার মূল্যায়নে অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্লাস শিক্ষার্থীদের বোধগম্য না হওয়া ও ক্লাস না নেওয়ার ব্যাপারে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় সভাপতির কাছে দুই দফায় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে। বিষয়টি বিভাগ তাকে জানালে শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্ষোভ থেকে এক কোর্সের পরিবর্তে দুই কোর্স নিয়েছেন ড. শাহিন।

আবদ্ধ কক্ষে পরীক্ষার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত গত বৃহস্পতিবারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত বুধবার আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদুর রহমান টিটু ৯ম ব্যাচের ৩য় সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থীর একসাথে ৩ টি কোর্সের ৯ ঘন্টার পরীক্ষা আবদ্ধ কক্ষে গ্রহণ করেন। গোপন তথ্যর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হোন। ওই আবদ্ধ কক্ষে সিটকিনি বন্ধরত অবস্থা থেকে ওই শিক্ষার্থীসহ সাথে তিনটি পরীক্ষার খাতা, স্মার্ট ফোন ও নকল জব্দ করেন। আবদ্ধ কক্ষে কোন পরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন ও আইন বিভাগের সভাপতি পৃথকভাবে লিখিত প্রতিবেদন দিলে প্রশাসনিকভাবে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এবিষয়ে ড. সাজ্জাদুর রহমান টিটু বলেন, ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষার সময় আমি ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলাম না। বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা।

আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. আনোয়ারুল ওহাব শাহীন বলেন, ৮টি ইনকোর্স নেয়নি, হতে পারে সর্বোচ্চ ২ টি ইনকোর্স একসাথে নিয়েছি এবং বিভাগের একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে আমি ২টি কোর্সের ক্লাস নিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ বলেন, ওই শিক্ষার্থীর ব্যাপারে আমি বিষয়টি লিখিতভাবে প্রশাসনের কাছে বিবৃতি দিয়েছি। তদন্ত সপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যদি বিষয়টি ঘটে থাকে তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, দূর্ণীতির বিরুদ্ধে ইবি প্রশাসন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রমানিত হলে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে।

 

স/শা