ইউজিসি’র গণশুনানির পরিবর্তে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি রাবি:  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের শুনানি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা ৩টায় মঞ্জুরি কমিশনের মিলনায়তনে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ গণশুনানি কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভাবমূর্তি, মর্যাদা ও ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের পরিপন্থী’ বলে উল্লেখ করে এর পরিবর্তে ক্যাম্পাসে এসে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় ও পত্র-পত্রিকা সূত্রে জানা গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের কথিত অর্ধশতাধিক সদস্যের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠিত তদন্ত কমিটির এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গণশুনানি মঞ্জুরি কমিশনে অনুষ্ঠিত হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনিয়মের বিরুদ্ধে মঞ্জুরি কমিশনের তদন্ত কমিটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন করে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন এটাই স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। কিন্ত তা না করে কমিশনে গণশুনানির যথার্থ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন থাকা অস্বাভাবিক নয়।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের প্রায় ৭০০ শিক্ষক এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি, মর্যাদা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের পরিপন্থী বলে মনে করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নানা ধরণের অনিয়মের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্ত এগুলোর কোনো ক্ষেত্রেই ইউজিসি কার্যালয়ে গণশুনানির প্রয়োজন-আয়োজন কোনটি পরিলক্ষিত হয়নি।
কেবলমাত্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা সম্মান ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ মনে করে।
উল্লেখ্য বিশ্ববিদ্যালয় কোন পর্যায়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তের বিরোধী নয়। প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ তদন্ত কমিটিকে ঘটনাস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে।
এর আগে, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি রাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও ইউজিসিতে দাখিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের একাংশ। এতে মোট ১৭টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়। এ অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ইউজিসি গণশুনানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।