আসিয়ানে নিষিদ্ধ মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তারা

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের জোট আসিয়ান। জান্তা শাসনাধীন দেশটির সংকট সমাধানে ১৫ মাস আগের প্রস্তাবে অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত জোটের সব বৈঠকে নিষিদ্ধ থাকবেন নেপিডোর শীর্ষ সামরিক কর্তাব্যক্তিরা।

কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের পর গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ওই নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। আগের দিন শুক্রবার আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি বিবৃতির মাধ্যমে সংকট থেকে উত্তরণে পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নে জান্তা কর্তৃপক্ষের তত্পরতার সমালোচনা করেন।

এতে অভিযোগ করা হয়, সংকট সমাধানে মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অগ্রগতি নেই। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মিয়ানমারে আসিয়ানের বিশেষ দূত পার্ক সোখন বলেন, ‘সেনা কর্মকর্তাদের এমন ভূমিকা রাখতে হবে যাতে দেখা যায় যে অগ্রগতি হয়েছে। এরপর আমরা অগ্রগতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হব। ’

শুক্রবারের বিবৃতিতে আসিয়ান মন্ত্রীরা আগামী নভেম্বরে শীর্ষ সম্মেলনের আগে জান্তা কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে জান্তা সরকারের প্রতিনিধিত্ব নিষিদ্ধ করা হলো।

জান্তা কর্তৃপক্ষ কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারলে পরিস্থিতি অন্য রকমও হতে পারে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষ পর্যন্ত বজায় থাকলে গত বছরের পর এবারের শীর্ষ সম্মেলনেও অনুপস্থিত থাকবেন জান্তা কর্তৃপক্ষের প্রধান মিন অং হ্লাইং।

জান্তার প্রত্যাখ্যান

শুক্রবার আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিবৃতিটি মিয়ানমারের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা হয়। ওই বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে জান্তা কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা আসিয়ানের অবস্থানকে প্রত্যাখ্যান করছে। দেশটির সামরিক বাহিনী বলছে, ‘মিয়ানমার মনে করে, আসিয়ান সনদের শর্ত ও মৌলিক নীতিগুলোর প্রতি সদস্য দেশগুলো সম্মান প্রদর্শন করলেই শুধু জোটটি ঐক্য ও কেন্দ্রিকতা বজায় রাখতে পারে। বিশেষ করে সমতা, অংশীদারি, সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের নীতির বিষয়ে সম্মান প্রদর্শন। ’

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে সেনা শাসন জারির পর থেকে দেশটির গণতন্ত্রপন্থীরা তীব্র আন্দোলন চালাতে থাকে। সেনার দমন-পীড়নে দুই হাজারেরও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার পাশাপাশি বহু মানুষ এখন কারাবন্দি।

গত মাসে মিয়ানমারের দুজন গণতন্ত্রপন্থীসহ চারজন বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে জান্তা প্রশাসন। এরপর মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনসহ আসিয়ান জোটের বেশ কয়েকটি সদস্য দেশ মিয়ানমারের ওপর ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। নমপেনের বৈঠকে জান্তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী উন্না মং লিউইন আমন্ত্রণ পাননি। গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জোটের বৈঠকেও নেপিডোর প্রতিনিধি ছিল না।

সূত্র: কালের কণ্ঠ