আবাসিক হলের নাম ঢেকে ব্যানার, সমালোচনার পর সরিয়ে ফেললো ছাত্রলীগ

রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলের নাম ডেকে রেখে হল ফটকের সামনে ছাত্রলীগের ব্যানার টাঙানোর পর সমালোচনার জেরে ব্যানার সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বুধবার (৩১ মে) হলের নাম ঢেকে ব্যানার টাঙানো নিয়ে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দেন শহীদ হবিবুর রহমান হলের প্রাক্তন আবাসিক ছাত্র মাহবুবুল আলম।
‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামক ফেসবুক গ্ৰুপে পোস্টে তিনি হলের নাম ব্যানারে ঢেকে যাওয়া সহ নিজের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘আমি শহিদ হবিবুর রহমান হল এর প্রাক্তন ছাত্র। গতকাল গেছিলাম ক্যাম্পাস এ। হলের সামনে ছবি তুলতে গিয়ে দেখছি হলের নামটি ঢেকে রেখেছে ব্যানার দিয়ে। কেন বাবা একটু পাশে টানানো হলে কি সমস্যা হতো। নতুন ছাত্রদের জন্য তো হলের নামটি জানা দরকার।’
পরে পোস্টটিতে হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের ব্যাপক সমালোচনা করে মন্তব্য করতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ওই পোস্টের কমেন্টে (মন্তব্যে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মীর আলহাজ্ব হোসেন লেখেন, ‘এই দোষটা শুধু ছাত্রলীগের না। এখানে হলের প্রভোস্ট, কর্মচারী সবাই অপরাধী। তাদের কি কারোর চোখে পড়ে নাই যে হলের নাম ব্যানারে ঢেকে গেছে? চোখে ঠিকই পড়েছে কিন্তু প্রভোস্ট এর মেরুদন্ড এতটুকুও শক্ত না যে ছাত্রলীগের ছেলেপেলেদের বলবে ব্যানারটা সরিয়ে দূরে টানাতে।’
ওই পোস্টে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিক রুবেল শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ছবিসহ কমেন্টে লেখেন, ‘এটা জিয়া হলের অবস্থা। আমার এপ্লিকেন্ট কে পাঠিয়েছিলাম জিয়া হলে, সে আর হল খুজে পায় না। হলের নামই ঢেকে দিয়েছে।’
পোস্টের কিছুক্ষণ পর হবিবুর রহমান হলের সামনের ব্যানারটি সরিয়ে ফেলে ছাত্রলীগ। অপরদিকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ক্যাম্পাস ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সামনে‌ হলের নাম ঢেকে রেখে ব্যানার টাঙানো রয়েছে।
এ বিষয়ে শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু বলেন, ‘আমি গলাব্যাথা নিয়ে ক’দিন ধরে অসুস্থ। ব্যানার ওটা আমার ছোট ভাইরা টাঙিয়েছে। ইতোমধ্যে সেটা খুলে ফেলাও হয়েছে।’
হলের সামনের এই ব্যানার দেখেছেন কি না জানতে চাইলে শহীদ হবিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ব্যস্ততার কারণে ৩-৪ দিন ধরে হলে যেতে পারিনি। কাল গিয়ে খোঁজ নিয়ে নামিয়ে দিব।’ এর কিছুক্ষণ পর তিনি মুঠোফোনে জানান ওই ব্যানার খুলে ফেলা হয়েছে।
এদিকে শহীদ জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ খান বলেন, ‘আমি এখনো জানি না আর এই কাজটা হয়তো ছোট ভাইরা করেছে।’ ব্যানার দেখে হলের প্রাধ্যক্ষ কিছু বলেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যার পরীক্ষার কারণে ব্যস্ত থাকায় ২-৩ দিন ধরে হলে আসেননি।’
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ সুজন সেন বলেন, আমি পরীক্ষার কারণে কয়েকদিন যেতে পারিনি হলে। তবে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আমি ব্যানার নামিয়ে দিবো।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে এখনো কিছু জানি। তবে এটা যারা করেছে অবশ্যই ঠিক করেনি।’