নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই:
দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীত মানেই প্রশান্তির ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ঋতু নওগাঁর আত্রাইয়ে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকেই শীতের আগমনী বার্তায় গ্রামীণ জনপদে শীতের করানারছে। সাধারণ মানুষ শীত জেকে বসার আগেই লেপ-তোষক তৈরির প্রস্তুতি শুরু করায় উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে পাড়া-মহল্লাই লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আমাদের দেশ ৬ ঋতুর বাংলাদেশে শীতের আগমনী বার্তা শীত কালে হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তা ঋতুর সাথে তাল মিলছে না। গ্রাম বাংলায় আজও প্রবাদ আছে আশ্বিনে গা করে শিনশিন। কিন্তু প্রকৃতির লীলা খেলায় কার্তিক মাসের শেষ ভাগে সকাল হলেই ঘন কোয়াশার আচ্ছন্ন আর শীতের আমেজ দেখা যাচ্ছে। আবার সূর্য উঠার কয়েক ঘন্টার পরেই রোদের তাপে শীত কোয়াশা দুর হয়ে গরমে ঘাম ঝড়ছে এই এলাকার মানুষের। এদিকে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে প্রায় সারা রাত ধরেই মাঝারী ধরণের শীতের কারণে অনেক বাসা-বাড়িতে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু হয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশু ও বৃদ্ধদের শীতজনিত নানা ধরণের রোগের পার্দুভাব দেখা দিয়েছে বলে ভ’ক্তভোগীরা জানান।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কনকনে শীত জেকে বসার আগেই তা মোকাবেলা করার জন্য অধিকাংশ হাট বাজারের লেপ তোষকের কারিগর ও পাড়া-মহল্লার মানুষ বাড়িতে বাড়িতে লেপ-তোষক তৈরি করছে। দিন যতই গড়াচ্ছে শীত ততই বেশি পড়ার আশংকায় উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষেরা নতুন নতুন লেপ তৈরি করছে।
লেপ তৈরির কারিগররা শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও যথা সময়ে সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। লেপ-তোষক অর্ডার দিতে আশা মানুষের তারাহুরার কারণে উপজেলার বান্ধাইখাড়া, আহসানগঞ্জ, মির্জাপুর-ভবানীপুর হাট, নওদুলি বাজারের শোরুমের ফাঁকা জায়গায় ক্রেতাদের উপস্থিত আর কারিগরদের ধুনুক দিয়ে তুলা ফাটানোর সরগরমেই যেন বলে দিচ্ছে লেপ-তোষক তৈরির ধুম পড়েছে।
আগমনী শীতের কারণে তুলার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পাশ্ববর্তী রানীনগর উপজেলার ত্রিমোহনী এলাকায় ৫টি তুলার মিলে উৎপাদিত মানসম্পন্ন তুলা দোকানীদের কাছে সরবরাহ করতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি শিমল তুলা ২শত ৭০ টাকা থেকে ২শত ৯০ টাকা, মিলের তুলা ৪৫ টাকা, কারপাস তুলা ১শত ৫০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রেণী ভেদে তুলার দাম মিল মালিকেরা বেশি নিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ভবানীপুর বাজারের লেপ-তোষক তৈরির কারিগর ছাইদুল ইসলাম জানান, আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলায় তুলার মিল স্থাপনের পর থেকে আমাদের ব্যবসার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। তুলা, কাপড়, সুতা ও অন্যান্য উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪/৫ হাত মাপের মিলের তুলা দিয়ে তৈরি লেপ ১ হাজার ৫০ টাকা এবং তোষক ৮শত ৫০ টাকার মত খরচ পড়ে। আমাদের তেমন লাভ না হলেও পেশার তাগিদে এই কাজ করে আসছি।
স/আ