আড়ানীতে আ’লীগের দুই নেতা-কর্মীকে কুপিয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর নির্বাচনে আ.লীগের নৌকার প্রার্থী শহীদুজ্জামান শাহীদের সমর্থক ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান ও তার ভাগ্নে আরিফ হোসেনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র মুক্তার আলীর সমর্থকরা।

আজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নুরনগর গ্রামের এই ঘটনা ঘটেছে। আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তবে ঘটনা জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে বলে জানা গেছে।

হামলাকারীরাও আড়ানী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। হামলার শিকার বজলুর রহমান অন্য এক কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, হামলার শিকার ব্যক্তিরা ও হামলাকারীরা আপন চাচাত ভাই। তারা একে অপরকে সমর্থন করে শুনেছি। তবে ঘটনা জানার পর তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

তবে বজলুর রহমানের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, নৌকার পক্ষে নির্বাচন করায় তার চাচাত ভাইয়েরা ক্ষিপ্ত।

উল্লেখ্য, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর নির্বাচনে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় আড়ানী পৌরবাজারের তালতলা এলাকায়  আ.লীগের প্রার্থী ও আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

উপজেলার আড়ানী পৌর নির্বাচনে আ.লীগের নৌকার প্রার্থী শহীদুজ্জামান শাহীদ গণসংযোগ শেষে আড়ানী বাজারের তালতলায় পথসভায় করছিল। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র মুক্তার আলী ও তার সমর্থকরা ১৫ থেকে ২০ জন অতর্কীভাবে হামলা চালায় এবং পরে তারা মসজিদের মাইকে লোকজনকে ডেকে মুক্তার আলীসহ তার দল নিয়ে নৌকার প্রার্থীর দুটি অফিস ভাংচুর, ৫টি মোটরসাইকেল, শতাধিক দোকান ভাংচর করে লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে আওয়ামীল প্রর্থীর কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ। তবে এ বিষয়ে মেয়র মুক্তার আলীর সমর্থকেরা মাইকিং করে জানান দেন যে তাদের গুলি ও বোমা বিস্ফোরণ করে হামলা করে মেরে ফেলা হচ্ছে।

এই ঘটনায় নৌকার নির্বাচন কমিটির আহবায়ক আবদুল মতিন মতি বাদি হয়ে মুক্তার আলীকে প্রধান আসামী করে ৫০ জনে নাম উল্লেখ করে ৫০০/৬০০ জনের নামে মামলা বিস্ফোরণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় মিলন নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এই ঘটনায় আহত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী শহীদুজ্জামান শাহীদের সমর্থক তুষার আহমেদ, সোহান আহমেদ, ইসলাম উদ্দিন, লাটু হোসেন, ইফসুফ আলী, সাবাজ আলীসহ প্রায় ২৫ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এই ঘটনার জের ধরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় নৌকার সমর্থক ফাকরুক হোসেন নামের এক কর্মীকে মুক্তার নিজে ও তার লোকজন মারপিটের ঘটনায় আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এদিকে, গত ৮ জানুয়ারি দুপুরে আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মুক্তারের সমর্থকরা মাছরাঙা টেলিভিশন রাজশাহীর ক্যামেরাপারসন মাহফুজুর রহমান রুবেল এবং দীপ্ত টিভির ক্যামেরাপারসন রফিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালায়।