আড়ানিতে সাংবাদিক রুবেলের ওপর হামলাকারী কে এই মিলন?

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর নির্বাচনে গণসংযোগের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিক ফজুর রহমান রুবেলের উপর হামলাকারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। ওই হামলাকারীর নাম মিলন ইসলাম। মিলন সাহাপুর এলাকার শাহাদাত হোসেনের ছেলে।

সে হাত দিয়ে সাংবাদিক রুবেলের গলা চিপে ধরে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে রুবেলকে রক্ষা করেন। তবে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন রুবেল।

ঘটনার বর্ণনা রুবেল নিজেই তার ফেসবুকে পোস্ট করেন। সিলসিটিনিউজের পাঠকদের উদ্দেশ্যে সেই পোষ্টটি তুলে ধরা হলো। রুবেল তার পোস্টে লিখেন-সংবাদের শিরোনাম যখন আমি নিজেই।

কল্পনাও করতে পারেনি এমন নির্মম হামলা হবে আমার উপর।

মৃত্যুর হাত থেকে আজ একটি নতুন জীবন পেয়েছি।

হামলাকারী যখন আমার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করছিলো তখন আমার চোখ পানিতে মুখ লাল হয়ে উঠছিল। বাঁচার চেষ্টা করছিলাম মনে হচ্ছিলো যেন আর বেঁচে থাকব না। কিন্তু বিধাতা হয়তো চেয়েছে তাই জীবন্ত ফিরেছি।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারণার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছি। আজ শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার শাহাপুর ও পেয়াদাপাড়া এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মুক্তার আলীর কর্মী-সমর্থকরা এ হামলা চালান। এসময় মাছরাঙা টেলিভিশন রাজশাহীর ক্যামেরাপারসন মাহফুজুর রহমান রুবেল আহত হন।

রুবেল বলেন, পেশাগত দায়িত্বপালনকালে আকস্মিকভাবে মুক্তার আলীর সমর্থকরা হামলা চালান। এসময় আমার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। হামলাকারীরা আমার মোবাইল সেটটি ভেঙে ফেলে। তারা আমার ক্যামেরাও ভাঙার চেষ্টা করে।

রুবেল আরো জানান, বাঘায় যুব মহিলা লীগের নেত্রীরা নৌকার প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। ওই সময় বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা নৌকার লিফলেট নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছিড়ে ফেলছিলেন। এই দৃশ্য তারা ভিডিও করছিলেন। আর তখনই বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা তাদের ওপর আক্রমণ করে। এক সমর্থক তার গলা টিপে ধরে বলে, ‘সাংবাদিকের বাচ্চা তোকে আজ মেরেই ফেলব’। এরপর স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় থানায় খবর দেওয়া হলেও পুলিশ রহস্যজনক কারণে বিকেল পৌনে চারটার দিকে এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছেনি।

তবে এ ব্যাপারে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ব্যাপারে হামলার শিকার সাংবাদিক অভিযোগ দিলে তা গ্রহণ করা হবে এবং ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে সাংবাদিকের ওপর মেয়র প্রার্থী মুক্তার আলীর সমর্থকদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে)। এক বিবৃতিতে আরইউজে সভাপতি কাজী শাহেদ এবং সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক বলেন, হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন এ ব্যাপারে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

স/আর