আগে ভাগে নেইমারদের লিগ বাতিল করে ‘বড় বোকামি’ করেছে ফ্রান্স!

করোনাভাইরাসের কারণে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহেই একে একে বন্ধ হয়ে যায় ইউরোপের সবদেশের ফুটবল লিগ। সবার মত ১৩ মার্চ আপাতত স্থগিত করে দেয়া হয়েছিল ফ্রান্সের লিগ ওয়ানও। এই লিগেই পিএসজির হয়ে খেলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার, ফরাসি বিশ্বজয়ী তারকা কাইলিয়ান এমবাপে।

করোনা মহামারিতে ফ্রান্সও বেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হয়। দেশটিতে ১ লাভ ৬৫ হাজার ৭১৯জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ২৯৮৬১ জন। এতবড় ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ার পর কবে আবার ফুটবল মাঠে ফিরবে না ফিরবে- এমন শঙ্কা থেকে হঠাৎ করেই এই মৌসুমের লিগ বাতিল ঘোষণা দেয় লিগ ওয়ান কর্তৃপক্ষ।

শুধু লিগ বাতিলই করেনি, একই সঙ্গে ১২ পয়েন্ট এগিয়ে থাকা প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে দেয়া হয়। অথচ লিগের তখনও ১০-১১টি রাউন্ড বাকি ছিল। তুলুজ এবং অ্যামিয়েন্সকে রেলিগেটেড করে দেয়া হয় লিগ টু’তে।

ফ্রান্স লিগ বাতিল করলেও, অন্য কোনো দেশ বাতিল করেনি। এমনকি করোনায় অন্যতম বিপর্যস্ত দেশ ইতালি, স্পেন কিংবা ইংল্যান্ডও বাতিল করেনি। বরং, করোনা সংক্রমণ কমে আসার পর একে একে তারা মাঠে ফুটবল ফিরিয়ে এনেছে। এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে জার্মান বুন্দেশলিগা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শেষ না হলেও লিভারপুলের চ্যাম্পিয়নশিপ নির্ধারণ হয়ে গেছে। স্পেন এবং ইতালিতে চলছে জম্পেস লড়াই।

হঠাৎ কোনো কিছু ভাবনা-চিন্তা না করে আগে ভাগে লিগ বাতিল করে দেয়ায় এখন মাথা কুটে মরছেন লিগ ওয়ান কর্তৃপক্ষ। ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ মাইকেল অলাস আক্ষেপ করেই বলছেন, ‘আগে ভাগে লিগ বাতিল করে দেয়া ছিল আমাদের অনেক বড় ভুল, অনেক বড় বোকামি।’

অলাস স্বীকার করছেন, কিভাবে এতবড় ভুলটি হলো। তিনি বলেন, ‘কেউ বাইরে ছিল না এই সিদ্ধান্তটি নেয়ার জন্য। কেউ বুঝতে পারছে না, কেন লিগটিকে সমাপ্ত ঘোষণা করা হলো।’

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস স্পোর্টসের জন বেনেটকে অলাস বলেন, ‘আমাদের উচিৎ ছিল, সব কিছু আপাতত স্থগিত করা। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা। এরপর সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার ছিল যে, এটা চালু রাখা হবে নাকি বন্ধ করে দেয়া হবে।’

অলাসের আক্ষেপমাখা স্বীকারোক্তি, ‘এটা অনেক বড় ভুল। প্রথম, দেশের এখন প্রয়োজন ছিল ফুটবল। এই মুহূর্তে আমরা ফুটবল দেখতে চাই। এখন আমরা দেখছি, অন্য দেশগুলোতে ফুটবল মাঠে ফিরে এসেছে। সবচেয়ে বড় কথা, ফ্রেঞ্চ ফুটবলে আমরা অনেক বড় একটি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি। কারণ, লিগ বাতিল করার কারণে আমরা অনেক রাজস্ব বঞ্চিত হলাম।’