আক্কেলপুরে নাতনিসহ শিক্ষককে পিটুনির পর প্রাণনাশের হুমকি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতা ও গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে তিলকপুর আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আলহাজ্ব ইয়াছিন আলী মাস্টারকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ওই মাস্টারের স্কুল পড়ুয়া ১২ বছর বয়সী নাতনি খাতিজাকেও মারধর করা হয়েছে।

শনিবার (০৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের গুডুমা পশ্চিম পাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার মৃত.ইরাজ আলীর ছেলে আব্দুর সোবহান (৫০) ও তার দুই ছেলে সালমান ফার্সি (৩৩) ও কামাল হোসেনের (৩০) বিরুদ্ধে।

জানা গেছে,  দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত কোর্টে একটি মামলা চলমান ছিলো। যে মামলায় আদালত শিক্ষক আলহাজ্ব ইয়াছিন মাস্টারের পক্ষে পরপর দুইবার রায় প্রদান করেন। কিন্তু বিবাদী আব্দুর সোবহান আদালতের রায় অমান্য করে পূনরায় আবারো তিনি সংশোধনীয় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক একটি জাম গাছ কেটে বিক্রয় করছিলেন।

এমন সংবাদ পেয়ে শিক্ষক ইয়াছিন মাস্টার জাম গাছটি কাটতে বাঁধা প্রদান করেন। এসময় ঘটনাস্থলেই তাকে প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষ সোবহান ও তার দুই ছেলে সালমান পার্শি ও কামাল হোসেন দেশিয় অস্ত্র দ্বারা এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করেন। এসময় তার চিৎকার শুনে ওই শিক্ষকের নাতনি স্কুল ছাত্রী খাতিজা তার দাদাকে রক্ষা করতে আসেন। কিন্তু তাকেও কিল ঘুষি মেরে আহত করা হয়।

পরে স্থানীয়রা শিক্ষক আলহাজ্ব ইয়াছিন মাস্টারকে উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করাতে আনলে কর্মরত চিকিৎসক হাসপাতালে বেড (আসন) নেই বলে তাকে ভর্তি করেননি। তাকে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন এমনকি হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়েছেন তার কোন কাগজপত্র দেননি বলেও জানা যায়। পরে তিনি আক্কেলপুর থানায় অভিযোগ করলে গেলে প্রতিপক্ষরা অসহায় শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি দিলে তিনি প্রাণভয়ে বাড়িতে চলে যান।

এ ঘটনার পরেও  প্রায় আনুমানিক ৩০-৩২ হাজার টাকা মূল্যের জাম গাছটি রবিবার সকালে প্রকাশ্যে একটি নছিমনযোগে চলে যান। এবিষয়ে প্রতিপক্ষ সোবহানের সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোন ভাবেই তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এমনকি এবিষয়ে থানায় এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগও করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ওসি আরও বলেন, আপনি আমাকে না জানিয়ে এসপি স্যারকে কেন বলেছেন আগে আমার কাছে শুনবেন না। আচ্ছা আপনার যা লেখার লিখুন কিন্তু সত্যটাই লিখবেন বলে ওসি কলটি কেঁটে দেন।

এর আগে দিবাগত রাতে ঘটনার বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার নূরে আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আগে ভুক্তভোগীদের থানায় একটি অভিযোগ করতে বলেন এবং অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষক আলহাজ্ব ইয়াছিন মাস্টার বলেন, আক্কেলপুর থানায় প্রতিপক্ষ সোবহানের নিকটতম একজন পুলিশের চাকরি করে তাই অভিযোগ করে আমরা কোন সুফল পাবো কিনা পাবো এবিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পাড়ছি না।

জি/আর