আইসিইউ সংকট, চট্টগ্রামে শিল্পপতির ভাইসহ ১৩ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় প্রকট হয়ে উঠছে আইসিইউ সংকট। গেল দু’সপ্তাহে শুধুমাত্র করোনার জন্য বিশেষায়িত জেনারেল হাসপাতালের ১০ শয্যার আইসিইউ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ৪১ জনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের।

এর মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় এক শিল্পপতির বড় ভাইও রয়েছেন। দেশসেরা শিল্পপতিদের অবস্থান থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ সময়ে চট্টগ্রামে আইসিইউ সংযুক্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে হাসপাতাল গড়ে ওঠেনি। এতে প্রয়োজনীয় সেবা না পাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো করোনা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতাল রয়েছে মাত্র দু’টি। যাতে করোনা রোগীর মোট শয্যা সংখ্যা ১৩০টি। আর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি অংশকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে করোনা রোগীদের জন্য। কিন্তু এসব হাসপাতালে আই সি ইউ শয্যা রয়েছে মোট ২০টি।

বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা মাত্র ৩০০। আর আইসিইউ বেড মাত্র ১০ টি।

গত কয়েকদিনে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে আইসিইউ ওয়ার্ডে নিতে হয় ৪১ জনকে। এর মধ্যে দেশের শীর্ষ স্থানীয় এক শিল্পপতির বড় ভাইসহ মারা গেছেন ১৩ জন। এমনকি বিভিন্ন শিল্পপতি পরিবারের আরো বেশ কিছু সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুযোগ-সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও জেনারেল হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছে।

অথচ দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগ্রুপগুলোর অন্তত ৫টির মালিক চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। এখানে বড় বড় শিল্প কারখানা গড়ে উঠলেও গড়ে উঠেনি মানসম্মত কোনো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান।

জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, রাষ্ট্রকেই এর দায়িত্ব নিয়ে আসতে হবে। শিল্পপতিদের এটা ব্যর্থতা।

স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ন ম মিনহাজুর রহমান বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল যেহেতু আইসিইউ সেবাটা সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করছে না, তাই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

নগরীতে প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে ২৫টির বেশি। এর মধ্যে অন্তত ১৫টিতে রয়েছে আই সি ইউ সুবিধা সম্বলিত কেবিন কিংবা ওয়ার্ড। কিন্তু করোনার এই দুঃসময়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া থেকে অনেকটা বিরত রয়েছে এসব ক্লিনিক। তাই সীমিত সম্পদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগকে।

সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ব্যবসায়ীরা যারা অন্যান্য সেক্টরে বিনিয়োগ করছেন স্বাস্থ্য খাতে সেভাবে বিনিয়োগ হয়নি।

গত ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বর্তমানে রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮শ। এর মধ্যে মারা গেছেন ৫০ জনের বেশি।

সুত্রঃ সময়