আইএসের হুমকিতে জন্মভূমি ছাড়ছেন আফগানিস্তানের হিন্দু ও শিখরা

শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের শেষ অংশটিও আফগানিস্তান ছাড়ছেন। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ক্রমবর্ধমান হুমকির কারণে, জীবন বাঁচাতে জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। একদিকে তালেবানের তাণ্ডব অন্যদিকে আইএস জঙ্গিদের হুমকি- এই দুইয়ের মাঝে পড়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তাঁদের জীবন। এর ফলে গত কয়েক বছরে শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের আড়াই লাখ বাসিন্দাদের মধ্যে বর্তমানে ৭০০ জনেরও কম আফগানিস্তানে বসবাস করছেন।

হামদার্দ ছদ্মনামের শিখ সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই এখানকার মানুষরা আমাদের ওপর অত্যাচার করে আসছে। কিছুদিন ধরে তা আরো বেড়েছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌছেছে যে রাস্তায় বের হলেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সরকারকে সবকিছু জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন সবাই। গত মার্চে আমাদের একটি গুরুদ্বারে হামলা চালায় আইএস জঙ্গিরা। এর ফলে আমার বোন, ভাইপো ও জামাই-সহ সাত জন আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে আমাদেরও খুব তাড়াতাড়ি এ দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, মাতৃভূমি ছেড়ে পালানো মাকে পেছনে ফেলে রেখে যাওয়ার সমান। এটা অত্যন্ত কঠিন তবুও আমি গত মাসে আফগানিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া এমন একটি শিখ ও হিন্দুদের গ্রুপে যোগ দিয়েছিলাম। যেখান থেকে তাঁরা শেষ পর্যন্ত তৃতীয় কোন দেশে চলে যাবে।

বিদেশে বসবাসকারী শিখ সম্প্রদায়ের এক নেতা চরণ সিং খালসা বলেন, ‘গত তিন বছর আফগানিস্তানের সমস্ত নাগরিককে খুব বাজে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ছিল শিখ ও হিন্দুদের অবস্থা। এর ফলে বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের জন্মভূমি ছেড়ে অন্য দেশে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। দু’বছর আগে কাবুলে আমার ভাইকে অপহরণের পর গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। এরপরই পুরো পরিবারসহ আফগানিস্তান ছেড়ে আসতে বাধ্য হই। ছোট্ট একটি সম্প্রদায়ের উপর এই ধরনের অত্যাচার কোনোদিন মেনে নেওয়া যায় না।’

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ