অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যানকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ

সরকারের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রমাণ থাকলেও অর্থের বিনিময়ে এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে আসামি না করে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের সচেতন নাগরিকের পক্ষে মো. শাহিদুল আলম নাহিদ এক লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিটও করেছেন ভুক্তভোগীরা। যা আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আদেশ বাতিল করে অভিযোগকারীর আবেদন পুনঃবিবেচনার জন্য দুদক চেয়ারম্যানকে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির উপজেলার সর্ববৃহৎ ২ নং দাঁতমারা ইউনিয়নের গত ২০১১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন মো. জানে আলম। গত ২০১৫-২০১৬ ও ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে হতদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রায় সোয়া কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ২০১৬ দুদক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করি। এরপর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর তদন্ত কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৪১ জন সাক্ষীর সশরীরে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে  অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেন। যেখানে চেয়ারম্যান মো. জানে আলমসহ সংশ্লিষ্ট ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলা দায়ের, চেয়ারম্যান মো. জানে আলমের সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি এবং উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলামসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো দাবি করা হয়, তদন্ত কর্মকর্তার সুপারিশকে উপেক্ষা করে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে মামলা থেকে কৌশলে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা অবগত হওয়ার পর দুদক চেয়ারম্যান বরাবর বিষয়টি পূনঃবিবেচনার জন্য গত ৮ অক্টোবর এবং ৯ নভেম্বর পৃথক দুটি আবেদন করি। কিন্তু আমাদের আবেদনগুলোকে দুদক প্রধান কার্যালয় আমলে না নিয়ে তাদের পূর্বের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এ অবস্থায় আমরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করি। গত ১৯ নভেম্বর বিচারপতি এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ শুনানী শেষে আগামী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে পূর্বের আদেশ বাতিল করে অভিযোগকারীর আবেদন পূনঃবিবেচনার জন্য দুদক চেয়ারম্যানকে আদেশ দেন।

ইতোমধ্যে অনিয়মের প্রতিবাদ করে অভিযোগ করায় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনকে এবং অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক আবু মুছা জীবনকে দুটি করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

এ অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারী অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে অভিযোগকারী হিসেবে শাস্তি দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ