অবশেষে বন্ধ হলো রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার ‘হাউজি’

নিজস্ব প্রতিবেদক: শুক্রবার কালের কণ্ঠ ও সিল্কসিটিনিউজে ‘রাজশাহীর ক্যাসিনো জেলা ক্রীড়া সংস্থার ‘হাউজি’: রমরমা জুয়া’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই বন্ধ হলো রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার ‘হাউজি’ খেলা।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সংবাদ প্রকাশের পরপরই সকাল থেকে খেলা বন্ধের নির্দেশনা আসে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ জুয়ার আসরটি বসে আসছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ আসে। কিন্তু তারপরও চলছিল ‘হাউজি’ খেলা। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবারও জেলা ক্রীড়া সংস্থার পরিচালনায় এই জুয়ার আসরটি চালানো হয়। এতে করে রাজশাহীর এক শ্রেণির মানুষ যেমন নিঃস্ব হচ্ছিল, তেমনি মাদকের ব্যবহারও বাড়ছিল এর মাধ্যমে। আবার এই হাউজির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে মাঝে মধ্যেই স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দেয় সংঘর্ষ। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে হাউজি বন্ধ হলেও আবারো প্রশাসনের ছত্রছায়ায় চলে অবৈধ জুয়ার এই আসরটি।

জেলা ক্রীড়ার মানোন্নয়নের জন্য অর্থ সংগ্রহের নাম করে এই খেলা চলতো। আর তার সিংহভাগই লুটপাট হতো। এর মধ্যে একটি অংশ যেতো জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের। আর আরেকটি অংশ যেত স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পকেটে। প্রতিদিন এভাবে অন্তত দেড়-দুই লাখ টাকা চলে যাচ্ছিল লুটপাটের ফাঁদে। আর একটি অংশ গিয়ে জমা পড়ছে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ঘরে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

এছাড়া প্রতিদিন যে পরিমাণ সাইড খেলা হতো, তার পুরো অংশ যেতো ওই নেতাদের পকেটে। আর নেতারা তাদের রাজত্ব বহাল রাখতে সেই টাকার কিছু অংশ তুলে দিতো স্থানীয় মাস্তান, নেশাখোর ও বখাটেদের হাতে। ফলে রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্টেডিয়ামের আশে-পাশের এলাকা পরিণত হয়েছিল নানা অপকর্মের অভয়ারণ্য হিসেবে। এর আগে সাইড খেলা নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ সালের ২০ জুন সাইড খেলা নিয়ে স্থানীয় যুবলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরে প্রায় ৬ মাস বন্ধ ছিল হাউজি খেলা। পুলিশ হাউজি প্যান্ডেলে তালা ঝুলিয়ে দিলেও পরবর্তীতে আবারো প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চালু হয় হাউজি খেলা।

অবশেষে কালের কণ্ঠ ও সিল্কসিটিনিউজে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বন্ধ হলো জেলা ক্রীড়া সংস্থার এ ‘হাউজি’ খেলা।

 

স/শা