শুক্রবার , ৮ জুলাই ২০১৬ | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

অফারের নামে ‘গ্রামীণ ফোন’র প্রতারণা

Paris
জুলাই ৮, ২০১৬ ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

‘৮৯ টাকায় দুই জিবি ইন্টারনেট, ২৯৮ টাকায় ৪ জিবি ইন্টারনেট’ কখনো মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিয়ে আবার কখনো টেলিভিশন, রেডিওতে বিজ্ঞাপন দিয়ে এমন অফারের কথা প্রচার করছে মোবাইল অপারেটর কম্পানী গ্রামীণ ফোন।

আদৌ কি সেই অফার ঠিক আছে? নাকি কেবলই ধান্দাবাজি ও প্রতারণায় নেমেছে গ্রামীণ ফোন। এটার প্রমাণ পেতে বেশি দূরে যেতে হবে না আপনাকে। ওইসব বিজ্ঞাপনের মোহে পড়ে কিছুটা টাকা সাশ্রয়ের আশায় আপনি প্যাকেজ কিনেছেন তো ঠকেছেন বা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এটাই বাস্তবতা। এর জন্য আলাদা কোনো প্রমাণ সংগ্রহ করতে ঘুরতে হবে না আপনাকে।

গ্রামীণ ফোনের এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন হাজার হাজার গ্রাহক। আর অফার কেনার পরেই তারা প্রকৃত বিষয়টি ধরা পড়ছে। ফিরতি মাসেজে। আবার কখনো কোনো ম্যাসেজও পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গ্রাহকের একাউন্ট থেকে যখন সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখনই গ্রাহক টের পাচ্ছেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

অধিকাংশ ইন্টারনেট প্যাকের সঙ্গে আলাদা করে ফেসবুক প্যাক জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে করে যেসব গ্রাহকের ফেসবুক বাদেই আলাদা প্রচুর পিরমানে ডাটা প্রয়োজন হয়, তারা বেশি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আর ফেসবুকে সাধারণত সীমিত ডাটা প্রয়োজন হয়। কিন্তু গ্রামীণ ফোন অফারের সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অর্ধেক ফেসবুক ডাটা জুড়ে দিচ্ছে-এমনটিই অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।

দৈনিক কালের কণ্ঠের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, তিনি তার মোবাইলে ফোনে একটি ম্যাসেজ দেখে ৮৯ টাকায় দুই জিবি ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনেন। সাত দিন মেয়াদের ওই প্যাকেজ কিনে তিনি তার ইন্টারনেট ভিত্তিক যাবতীয় কাজকর্ম সারতে থাকেন। কিন্তু দুদিন পরে দেখেন তার একাউন্টের প্রায় ৩০০ টাকা হাওয়া। এরপর তিনি মোবাইলের ইন্টারনেট ব্যালেন্স চেক করতে গিয়ে দেখেন, তিনি যে দুেই জিবি ডাটার ইন্টারনেট কিনেন, সেটি আদৌ অন্য ক্ষেত্রে অপারেট করা যাবে না শুধুই ফেসবুকের জন্য ওই প্যাকেজটি।

90

এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফেসবুক প্যাক হলে আগেই ম্যাসেজের সঙ্গেই বলে দিতে পারতো গ্রামীণ ফোন যে এটা ফেসবুক প্যাকেজ। কিন্তু তা না করে তারা গ্রাহকদের সঙ্গে রীতিমতো প্রতারণা ও ধান্দাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে। এতে করে গ্রাহকদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে গ্রামীণ ফোন।

রাজশাহী নগরীর আরেক গ্রাহক হোসেন জামাল সিল্কসিটিনিউজকে বলেন, তিনি গ্রামীন ফোনের ২৮৯ টাকার প্যাকেজ কিনেন ৪জিবি ইন্টারনেট ডাটা পাবেন এই আশায়। তিনিও মোবাইলে ম্যাসেজ এবং একটি রেডিওতে বিজ্ঞাপন প্রচারে আকৃষ্ট হয়ে ওই প্যাক কিনেন। কিন্তু সেটি কেনার পরে তিনি ম্যাসেজ দেখেন দুই জিবি সাধারণ ডাটা আর দুই জিবি ফেসবুক ডাটা মিলে মোট ৪ জিবি তাকে দেওয়া হয়েছে।

হোসেন জামাল বলেন, ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনলে আলাদা করে ফেসবুক ব্যবহার করতে হয় না। ওই প্যাকেজেই ফেসবুক ব্যবহার করা যায়। ফেসবুকের জন্য বেশি ডাটাও প্রয়োজন্ হয় না। আবার মাত্র ১৪ দিনে ২ জিবি ফেসবুক ডাটাও ব্যবহার করা যাবে না।  কিন্তু গ্রামীণ ফোন ৪ জিবি ডাটার কথা বলে দুই জিবি ফেসবুক ডাটা জুড়ে দিয়ে প্রতারণা করছে। এভাবে আমার মতো হয়তো হাজার হাজার গ্রাহকের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা প্রতারণা করছে গ্রামীণ ফোন।

সিল্কসিটিনিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রামীণ ফোনের ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনে এভাবে লাখ লাখ গ্রাহক প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আবার কথা বলতে গিয়েও নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। কখনো কখনো অতিরিক্ত টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে গ্রাহকের অজান্তেই।

images

প্রসঙ্গত: গ্রামীণ ফোনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রতারণার অভিযোগে রাজশাহীতে গ্রামীণ ফোন কাস্টমার কেয়ারের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এক গ্রাহক। রাজশাহীর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নগরীর শিরোইল এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট হোসেন আলী পিয়ারা।

৪০৬, ৪১৮, ৫০৬ (২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। বাদির হয়ে আদালতে মামলাটি দাখিল করেন অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান।

মামলার আসামীরা হলেন, গ্রামীণ ফোনের সিনিয়র কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার সোহানুর রহমান, রাজশাহী অফিসের লিড ম্যানেজার মোহাম্মদ শহিদুল আলম, চিফ এক্সিউটিভ অফিসার রাজীব শেঠী, চিফ হিউম্যান রির্সোস অফিসার কাজি মোহাম্মদ শাহিদ এবং ঢাকার বারিধারা অফিসের চিফ কর্পোরেট অ্যাফের্য়াস অফিসার মাহমুদ হোসাইন।

তবে এসব বিষয়ে গ্রামীণ ফোনের রাজশাহী কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর