অন্ধকারে লড়তে সক্ষম অ্যাপাচে যেভাবে পেল ভারত

আগেই হাতে চলে এসেছিল ১৭টি। সেগুলো কাজে লাগানো হচ্ছিল। বাকি পাঁচটি চলতি বছরের মার্চের মধ্যে ভারতে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে সেই প্রক্রিয়া থমকে যায়।

এবার মে মাসের শুরুর দিকে চীনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা শুরুর পর একটুও সময় নষ্ট করেনি ভারত। দ্রুত বোয়িংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। লাদাখে মোতায়েন করা হয় অত্যাধুনিক মার্কিন এএইচ-৬৪ অ্যাপাচে হেলিকপ্টার।

পূর্ব লাদাখে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর থেকেই নয়াদিল্লি স্পষ্ট জানত, বিবাদ মিটে যেতে যথেষ্ট সময় লাগবে। আধুনিক বিশ্বে যুদ্ধের শঙ্কা তেমন না থাকলেও যাবতীয় বিপদের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে কেন্দ্রীয় ভারত সরকার।

কয়েক দিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের নিকটবর্তী বিমান ঘাঁটিতে অ্য়াপাচে হেলিকপ্টার, ১৫ টি চিনুক কপ্টারের মতো বিমানবাহিনীর বিভিন্ন মূল্যবান সম্পত্তি পাঠানো হতে থাকে। তার মধ্যে অ্যাপাচের প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

যারা চপারের বিভিন্ন সরঞ্জাম একত্রিত করবেন, তাদের জন্য জাতীয় সুরক্ষার আওতায় প্রত্যাহার করা হয় বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টিনে থাকার নিয়ম। ১ জুনের মধ্যে ওই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ভিসা অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এরই মধ্যে ভারতে পৌঁছে যায় অ্যাপাচের যন্ত্রাংশ। যে হেলিকপ্টারকে ‘আক্রমণকারী চপারের ফেরারি’ হিসেবেও অভিহিত করেন অনেকে। অ্যাপাচের ঠিক নাকের নীচে ৩০ এমএমের ক্যানন রয়েছে। যা দু’মিনিটেরও কম সময় এক হাজার দুশ রাউন্ড গুলি ছুড়তে পারে। ৮০ টি রকেটের পাশাপাশি হেলফায়ার মিসাইলও বহন করতে পারে অ্য়াপাচে। যা ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যেও শত্রু ঘাঁটিকে খুঁজে বের করতে পারে, চিহ্নিত করতে পারে এবং ধ্বংস করে দিতে সক্ষম।

দ্রুত সেই কপ্টারের যন্ত্রাংশ একত্রিত করে বিশেষজ্ঞ দল। লাদাখে মোতায়ন করার জন্য পরীক্ষার পর বিশ্বের অন্যতম ঘাতক কপ্টারকে তড়িঘড়ি পাঠানকোট বিমান ঘাঁটিতে পাঠানো হয়।

যে কপ্টারের মুহূর্তের মধ্যে শূন্যে বাঁক খাওয়ার দুর্ধর্ষ ক্ষমতা রয়েছে। একই সঙ্গে অত্যন্ত নীচু দিয়ে উড়তে পারে। পাশাপাশি, উচ্চতা এবং ঝোপঝাড় ব্যবহার করে শুত্রুপক্ষ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনশ কোটি বিলিয়ন ডলারে কেনা ২২ টি অ্যাপাচে হেলিকপ্টার ভারতের সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে গেম চেঞ্জার হয়ে উঠতে চলেছে। অন্যথায় ভারতকে মাঝারি ক্ষমতা সম্পন্ন রাশিয়া এম-১৭ এবং কার্যত অবলুপ্ত হতে চলা এমআই-২৬ কপ্টারের ওপর নির্ভর করতে হত। আর এখন অ্যাপাচে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপের আগে দু’বার ভাবতে বাধ্য হবে চীনা সেনাদের।