অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজকে হাইকোর্টের ভর্ৎসনা 


সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

উচ্চ আদালতের জামিনে থাকা অবস্থায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার আসামিকে কারাগারে পাঠানোয় জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জিন্নাৎ জাহান ঝুনুকে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট। এ ঘটনায় সোমবার তলবে হাজির হয়ে মৌখিকভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চান বিচারক জিন্নাৎ জাহান ঝুনু। ‘অসতর্কতাবশত’ ও ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ উল্লেখ করে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি নিঃশর্ত ক্ষমা চান তিনি। এরপর ভুলের দায় থেকে অব্যাহতি দিলেও এর জন্য তাকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

ওই বিচারককে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘আপনি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি। এমন করলে (হাইকোর্টের দেওয়া জামিন পাশ কাটিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানো) বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের কী ধারণা তৈরি হবে? আপনি ভুলের উপর ভুল করেছেন। আপনার ভুলের কারণে একজন ব্যক্তিকে অতিরিক্ত ২৩ দিন জেল খাটতে হয়েছে। এখন চলেন, আপনিসহ আমরা (হাইকোর্টের দুই বিচারক) তিনজন গিয়ে জেল খেটে আসি। ’

৫০ ডলারের ৩০টি জালনোট পাওয়ায় বকশিগঞ্জ থানার কুতুবের চর গ্রামের মো. জাকিরুলের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর জামালপুর থানায় মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন জাকিরুল। এর শুনানি নিয়ে গত ১০ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল দিয়ে জাকিরুলকে অন্তর্র্বতীকালীন জামিন দেন। জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. সারোয়ার আলম চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেম।

আইনজীবী মো. সারোয়ার আলম চৌধুরী বলেন, রুল নিষ্পত্তি পর্যন্ত জাকিরুলকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এরপর ১৯ এপ্রিল জামালপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে জামিননামা (বেইল বন্ড) দাখিল করে কারাগার থেকে মুক্তি পান জাকিরুল। গত ২৪ মে মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন হাইকোর্টের জামিন প্রাপ্তির আদেশ যুক্ত করে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন নিয়মিত করণের আবেদন করেন জাকিরুল। উচ্চ আদালতের জামিনে থাকলে নিয়ম অনুযায়ী বিচারিক আদালতে আবেদন করে জামিন নিয়মিত করতে হয়। কিন্তু ওইদিন বিচারক ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জামিন নামঞ্জুর করে জাকিরুলকে কারাগারে পাটানোর আদেশ দেন।

বিষয়টি নজরে আনা হলে গত ৬ জুন হাইকোর্ট এর ব্যাখ্যা জানতে বিচারক বিচারক জিন্নাৎ জাহান ঝুনুকে তলব করেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। সেদিন হাইকোর্ট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল হাশেমকে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জিন্নাৎ জাহান ঝুনুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে জাকিরুলকে জামিন দিতে বলেন। পরে গত ১৫ মে জাকিরুলকে জামিন দেওয়া হয়।

সূত্র: কালের কণ্ঠ