সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
সবজি বিক্রি, আবার পরিবহন শ্রমিকের কাজ করে চলে সংসার-এর মধ্যেই টাকা জমান শেরপুরের শেখ মমতাজ উদ্দিন; তাই দিয়ে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে গরিবদের খাওয়ান তিনি।
৩০ বছর ধরে এই আয়োজন করে আসছেন শেরপুর শহরের নবীনগর এলাকার বাসিন্দা মমতাজ (৫৭)।
১৫ অগাস্টের আগের দিন রোববার তার বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, উঠানে হাড়ি-পাতিল ও লাকড়ির স্তূপ। চলছে চুলা তৈরির কাজ।
পাশে চেয়ারে বসে তদারক করছেন মমতাজ।
তিনি বলেন, “আমার প্রয়াত বাবার (ফজি শেখ) নির্দেশে জাতির জনকের প্রতি ভালবাসার কারণে গত ৩০ বছর ধরে শোক দিবসে প্রতিবেশী, গরিব ও অসহায় লোকদের জন্য মেজবান করছি।
“এবারও আমি এবং আমার ছেলেদের জমানো অর্থে এলাকার প্রায় ৬০০ লোককে খিচুড়ি, জিলাপি ও বিরিয়ানি খাওয়াব।”
যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন এ আয়োজন করে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট একদল সেনা সদস্যের হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় নানা কর্মসূচি, যার মধ্যে কাঙালি ভোজ অন্যতম।
তিন ছেলে, তিন মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে মমতাজের সংসার। কখনও সবজি বিক্রি করেন, আবার কখনও পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। তিন ছেলেও বাবার মতোই দিনমজুর।
শোক দিবস উপলক্ষে খাবারের আয়োজন ছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, কালো পতাকা উত্তোলন ও বিশেষ দোয়া মাহফিল থাকছে মমতাজের বাড়িতে।
এই আয়োজনে এসে অনেকে তাকে দু-একশ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন জানিয়ে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মমতাজ।
জেলা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান বলেন, “শেখ মমতাজ দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে জাতির জনকের জন্য তার বাড়িতে মেজবান করে আসছে।
“অনেকের সামর্থ্য থাকার পরও কিছুই করে না। কিন্তু দিনমজুর মমতাজ প্রতি বছরই জাতীয় শোক দিবসে মেজবান করে।”
মমতাজের এমন কাজে এলাকাবাসী হিসেবে গর্বিত বলে মন্তব্য করেন নবীনগরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী কামরুল আহসান।
বাবুর্চি মো. উজ্জ্বল মিয়া বলেন, “শেখ মমতাজ গরীব হলেও ৩০ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর জন্য মেজবান করে আসছে। আমি ১০/১২ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে রান্নাবান্না করে দিচ্ছি তাকে।”
সূত্র: বিডি নিউজ