বুধবার , ১১ মে ২০২২ | ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসপাতাল থেকে ৫ জনকে ‘চ্যাংদোলা’ করে নেওয়া হলো থানায়!

Paris
মে ১১, ২০২২ ৮:৪৪ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ 

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হাসপাতালে ভর্তি ৫ জনকে গ্রেফতার ও তাদের হাত-পা ধরে ঝুলিয়ে (চ্যাংদোলা) নিচে নামানো ও তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিকালে সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।

এ অভিযোগে ৪ জন এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত ও দুই পুলিশ সদস্যকে জামালপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- এসআই আলতাফ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মোন্তাজ আলী, ওয়াজেদ আলী ও পুলিশ সদস্য সাথী আক্তার এবং মোজাম্মেল হক।

এ ঘটনা জামালপুর সদর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের কাজ শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ।

জানা যায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসি বাজার এলাকার আব্দুল জলিলের ভোগদখলী ২০ শতাংশ বাড়ি ভিটার জমি নিয়ে প্রতিপক্ষ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। এ জমি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। এই বিরোধপূর্ণ জমি সোমবার মুজিবুর রহমান তার দলবল নিয়ে দখলের চেষ্টা চালায়।

এতে বাধা দেয় আব্দুল জলিল ও তার সমর্থকরা। পরে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং লাঠিসোটা, রডসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

সংঘর্ষে গুরুতর আহত- আব্দুল জলিল (৬৪), তার স্ত্রী লাইলী বেগম (৫০), বড়ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (৩০), মেজো ছেলে ওয়াজ করোনি (২৫), ছোট ছেলে হামদাদুল হককে (১৬) সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একই পরিবারের ওই ৫ জনের বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ মুজিবুর রহমান।

এ প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর আহত ৫ জনকে গ্রেফতার করতে যায়। এ সময় তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং হাত-পা ধরে ঝুলিয়ে টেনে হিঁচড়ে হাসপাতালের দুতলা থেকে নিচ তলায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ অমানবিক পুলিশের কর্মকাণ্ডের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।

এরপর পুলিশ তড়িঘড়ি করে গ্রেফতারকৃত ৫ জনকে জামালপুর জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়। এতে জামালপুর পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমদে মঙ্গলবার রাতে ওই ৪ জন এসআইকে তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্ত ও দুই পুলিশ সদস্যকে জামালপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজ করে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার দেবাশীষ রাজবংশী বলেন, পুলিশ আইনকে উপেক্ষা করে জোরপূর্বক হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর আহত রোগীদের ছাড়পত্র নিয়েছে। এরপর রোগীদের অমানবিকভাবে মারপিটসহ টেনে হিঁচড়ে দুইতলা থেকে নিচে নামিয়ে এনেছে। যা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে পুলিশ।

জামালপুর পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় ৪ জন এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত ও দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া এক সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর

সর্বশেষ - জাতীয়