বিশ্বকাপজুড়েই অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছিল ভারতকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা স্বাগতিকরা ফাইনালের আগে টানা দশ ম্যাচ অপরাজিত ছিল। তবে ফাইনালে সেই অস্ট্রেলিয়ার কাছেই পথ হারাল রোহিত-কোহলিরা। এক যুগ পর শিরোপার খুব কাছাকাছি গিয়েও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। এমন হারে বিধ্বস্ত থাকারই কথা টিম ইন্ডিয়ার ড্রেসিংরুম।
চারপাশে অদ্ভুত নীরবতা। বিধ্বস্ত হয়ে বসে গোটা দল। এতদিন যে মুখগুলোতে হাসির ফোয়ারা ছুটতো, ফাইনালের পর দেখা গেল বিপরীত চিত্র। পরাজয়ের গ্লানি গ্রাস করেছে সবাইকেই। এক লাখ ত্রিশ হাজার দর্শককে স্তব্ধ করে দিয়ে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার ওরা এগারো। ম্যাচ শেষ হতেই মাঠে হতাশায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় কোহলি-রোহিতদের। কারও চোখ ছলছল, হাত দিয়ে মুখ ঢাকেন কেউ কেউ। কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় সিরাজদেরও। সতীর্থদের কেউ কেউ আবার হাজির হন শান্ত্বনা দেওয়ার কাজে।
পরে ড্রেসিংরুমের বিধ্বস্ত পরিবেশের মধ্যেই নিজের কর্তব্য পালন করলেন ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপ। সেরা ফিল্ডারের পুরস্কার। চলতি বিশ্বকাপে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার অভিনব এই উদ্যোগ। প্রতিটা ম্যাচের শেষে সমর্থকদের চোখ থাকতে কে সেরা ফিল্ডার হবেন সেদিকে। আকর্ষণের আরও একটা কারণ ছিল। সেটা হলো এই পুরস্কারজয়ীদের নাম ঘোষণায় অভিনবত্ব। ড্রেসিংরুমের উৎফুল্ল পরিবেশ দেখেও এতদিন মন ভরেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। অথচ ফাইনালের পর দেখতে হলো ঠিক তার উল্টো ছবি।
ফাইনালে সেরা ফিল্ডারের পুরস্কার পেলেন বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও এই খেতাব গিয়েছিল তারই দখলে। শেষদিনও তিনিই পেলেন। যদিও শেষটা যেভাবে করতে চেয়েছিলেন সেটা হয়নি। সেজন্যই সম্ভবত এদিন সেরা ফিল্ডারের নাম ঘোষণায় কোনো অভিনবত্ব দেখা গেল না। আগের ম্যাচের সেরা ফিল্ডারের খেতাবজয়ী রবীন্দ্র জাদেজা শুধু এলেন, কোহলির গলায় সেরা ফিল্ডারের পুরস্কারটি তুলে দিলেন এবং তাকে সান্ত্বনা দিলেন। গোটা ব্যাপারটাই কেমন যেন দায়সারা মনে হয়েছে, সেটাই স্বাভাবিক হয়তো।
আসলে ফাইনালে ব্যাটিং-বোলিংয়ের মতো ফিল্ডিংয়েও অস্ট্রেলিয়া পেছনে ফেলেছে ভারতকে। অস্ট্রেলিয়া যেখানে ফিল্ডিংয়েই অন্তত ৩০-৪০ রান বাঁচিয়েছে, সেখানে ভারতীয়রা অনেকটাই ঢিলেঢালা ছিলেন। এসবের মধ্যেও বিরাট কোহলি ডেভিড ওয়ার্নারের ভালো একটা ক্যাচ নিয়েছেন। মাঠে এনার্জিও দেখিয়েছেন। সেজন্য তাঁকেই দেওয়া হল ওই পুরস্কার।