পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। ফলে ক্ষমতায় যেতে জোট গড়ার বিকল্প নেই কারও হাতে। এ অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে জোটবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ছয়টি দল।
গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে নতুন জোটের ঘোষণা দেন পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট, বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির বাবা ও পিপিপি নেতা আসিফ আলি জারদারি। এ সময় তার পাশে ছিলেন অন্যান্য দলীয় প্রধানরাও।
জারদারি জানান, জোটবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছয়টি দল। সেগুলো হলো — পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ), বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি) এবং ইস্তেহাকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি)।
তিনি জানান, নতুন সরকার হবে আগের পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকারের আদলে।
এর আগে, পিএমএল-কিউ সভাপতি চৌধুরী সুজাত হুসেনের বাসভবনে দলগুলোর প্রধানদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পরেই সংবাদ সম্মেলনে ছয়-দলীয় জোটের ঘোষণা দেন জারদারি।
কার দখলে কোন পদ
জোট নেতাদের সংবাদ সম্মেলনের পরে পিএমএল-এন তথ্য সচিব মরিয়ম আওরঙ্গজেব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ঘোষণা দেন, পার্টি সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য শাহবাজ শরিফকে এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য মরিয়ম নওয়াজকে মনোনীত করেছেন।
অবশ্য শীর্ষ নেতাদের সংবাদ সম্মেলনের আগেই পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছিলেন, তার দল কেন্দ্রীয় সরকারের অংশ না হলেও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে পিএমএল-এন’কে সমর্থন দেবে।
জাতীয় পরিষদের স্পিকার, সিনেট চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডেন্ট পদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব পদের জন্য দলগুলো তাদের মনোনীত প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তিনি চান, তার বাবা যেন প্রেসিডেন্ট হন।
বিলওয়ালের দাবি, দেশ জ্বলছে এবং কেউ যদি এই আগুন নেভাতে পারেন, তিনি হলেন আসিফ আলি জারদারি।
সূত্রগুলো বলছে, প্রেসিডেন্ট পদের পাশাপাশি বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী পদের দিকেও নজর রাখছে পিপিপি। দলটির নেতা সরফরাজ বুগতি এরই মধ্যে প্রদেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অবহিত করেছেন।
সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য শাহবাজকে পিপিপি’র সমর্থনের বিনিময়ে প্রেসিডেন্ট পদে জারদারিকে সমর্থন করতে সম্মত হয়েছে পিএমএল-এন নেতৃত্ব।
অর্থাৎ, পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পিএমএল-এন’র এবং প্রেসিডেন্ট পিপিপি’র হবেন।
এদিকে, পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ নেতা রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, পিপিপি প্রেসিডেন্ট পদ দাবি করেনি বা কোনো প্রতিশ্রুতিও দেয়নি। একটি বিবৃতিতে তিনি বলেন, শাহবাজের মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। অন্যদিকে আসিফ আলি জারদারির রয়েছে বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার রাজনৈতিক দক্ষতা।
রানা সানাউল্লাহ বলেন, আমরা আশা করি, জেইউআই-এফ প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানও জোট সরকারের অংশ হবেন।