আমানুল হক আমান, বাঘা:
সিফাতুর রহমান সিফাত। বয়স ছয় বছর। মা ফাতেমা খাতুনের সাথে নানার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল। সিফাতের ক্লাস কামাই যাচ্ছে তাই বারবার মাকে তাগাদা দিচ্ছিল। কিন্তু মা বেশ কিছু দিনপর বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে। তাই আর ক’দিন থেকে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিল। সিফাত ফিরল, কিন্তু লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল। এমনি ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা দাবিয়াতলা গ্রামের আবু বক্করের পরিবারে।
জানা যায়, উপজেলার দিঘা দাবিয়াতলা গ্রামের আবু বক্কর আট বছর আগে বিয়ে করে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কালিবাড়ি গ্রামের আবদুর রহমানের ছোট মেয়ে ফাতেমা খাতুনকে। বিয়ের পর ফাতেমা খাতুন বছরে দু/একবার বাবার বাড়িতে যায়। স্বামী বেসরকারি মাই চয়েজ কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার। ফলে তিনি যেতে পারেনি। তাই ছেলেকে নিয়ে ঈদের পরে ১০ জুলাই বাবার বাড়িতে যায়। সেখানে নানা ১৭ জুলাই আরেক মেয়ের ছেলে রিফাত ও সিফাতকে নিয়ে বাড়ির পাশে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুকুরে গোসল করতে যায়। তারা গোসল শেরে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় সমজিদে আজান পড়ে। তাদের দুইজনকে বাড়িতে যেতে বলে নানা আবদুর রহমান মসজিদে যায়। এ সময় সিফাতের পায়ে কাদা লেগে যায়। তারা পূনরায় পুকুর পাড়ে পা ধুতে আসে। এ সময় সিফাত পা স্লিপ করে পুকুরে পড়ে যায়। আরেক মেয়ের ছেলে রিফাতের আত্মচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসে। তাকে অনেক খুঁজাখুঁজির পর পাওয়া যায়। পরে তাকে স্থানীয় পাথরঘাটা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। পাথরঘাটা থেকে সিফাততে এই দিন ভোর ৫টার দিকে দিঘার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তারা সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দিঘাতে পৌছে। তাকে সকাল ৯টায় পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সিফাতের পরিবারের আহাজারি দেখে চোখের জল কেউ ধরে রাকতে পারেনি। সিফাতের মৃত্যুতে সারা দিঘা স্থবির হয়ে যায়। সিফাত স্থানীয় দিঘা অনুশীলন একাডেমির বেবি শ্রেণির শিক্ষার্থী।
অনুশীলন একাডেমির পরিচালক গোলাম তোফাজল কবীর মিলন বলেন, সিফাত ছোট শিশু হলেও মেধাবী ছিল। সিফাত প্রতিটি বিষয় মনোযোগসহকারে ক্লাস করত। তার অকাল মৃত্যু মেনে নেওয়ায় কষ্টকর।
স/মি