সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
রিমান্ড শুনানিতে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময়ের জেরে ঢাকা মহানগর আদালতের নাজির শাহ মো. মামুনের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বিতীয় তলায় নাজিরের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়।খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি প্রসিকিউশন ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে কামরুলের সঙ্গে নাজির মামুনের কুশল বিনিময়ের বিষয়টি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেনকে অবহিত করেন ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা। পরে বিচারক তার (নাজির মামুন) বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এ ছাড়া নাজির মামুনের বিষয়ে ব্যবস্থা চেয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মারজিয়া হীরা নামের একজন আইনজীবী।
অভিযোগে বলা হয়, সকালে কামরুল ইসলামের রিমান্ড শুনানির সময় তার ছেলে ডা. তানজির ইসলাম অদিত ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতের লাল সালুর ভেতরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন মহানগর আদালতের নাজির মামুন আসামি কামরুল ইসলামকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করেন। আসামির ছেলেকে আদালতের ভেতরে প্রবেশের বিষয়ে সহযোগিতা করেন। নাজির ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আসামি কামরুল ইসলামের নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগিতা করেছিলেন।
ভাঙচুরের বিষয়ে নাজির শাহ মো. মামুন বলেন, তিনি বাইরে আছেন। তিনি শুনেছেন তার অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা কামরুলের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও সহযোগিতার বিষয়ে নাজির মামুন বলেন, মহানগর আদালতে কামরুল ইসলাম যখন আসতেন, তখন আমার অফিসে বসতেন। এইভাবে তার সঙ্গে আমার পরিচয়।আজকে সকালে একটি কাজে সিএমএম আদালতে যাই। তখন হঠাৎ সাবেক মন্ত্রী কামরুলের সঙ্গে দেখা হয়। তখন তিনি আমাকে ডেকে বলেন, ‘এই নাজির কেমন আছ’? তখন আমি বলেছি, জি স্যার, আমি ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন? পরে আমি কাজ শেষে চলে এসেছি। আর তার ছেলেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তার সঙ্গে আমার পরিচয় নেই।
প্রত্যক্ষদর্শী নেজারত শাখার অফিস সহায়ক মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে কিছু আইনজীবী নাজিরের অফিসে ভাঙচুর করেন।তখন নাজির অফিসে ছিলেন না।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, নাজিরের কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমার ফোর্স সেখানে গেছে। তারা রিপোর্ট দিলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।তাকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আজ (মঙ্গলবার) ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমানের আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুলকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কামরুলকে ৮ দিনের রিমান্ডে দেন আদালত।
সূত্র: যুগান্তর