বৃহস্পতিবার , ১৮ জুলাই ২০২৪ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাবিতে পাঁচ শিক্ষার্থী আটক, ক্যাম্পাস পুলিশের নিয়ন্ত্রণে

Paris
জুলাই ১৮, ২০২৪ ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

 

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের পর পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের ভেতর থেকে চার জনকে এবং রহমতুন্নেছা হল থেকে এক ছাত্রীকে আটক করা হয়। বর্তমানে পুরো ক্যাম্পাস পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

আটককৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোতাসিম বিল্লাহ মাহিম, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রনি ইসলাম, বখতিয়ার হাসিন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আব্দুর রাজ্জাক এবং রাজশাহীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী।

আটকের বিষয়ে জানতে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক পারভেজের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। পরে থানার ডিউটি অফিসারকে কল দিলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে বলেন।

এরপর আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসেছেন। তখন প্রশাসন ভবনের গেট ভেঙে লাঠিসোঁটা নিয়ে ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। কয়েকজনের কাছে পেট্রোলের বোতল পাওয়া যায়। এ সময় পাঁচ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে চার জন আমাদের শিক্ষার্থী। তবে ছাত্রী বহিরাগত ছিল।

এদিকে, সন্ধ্যায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের পর থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাতে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, উপাচার্যের বাসভবেনর সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য। এছাড়া ক্যাম্পাসের বাইরে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে পিকআপ নিয়ে টহল দিচ্ছেন বিজিবির সদস্যরা। ক্যাম্পাসের বিনোদপুরে গেটে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ শিক্ষার্থী হল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। হলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গুটিকয়েক শিক্ষার্থী কেবল হলে অবস্থান করছেন।

ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলাসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতিনিধিদের আমরা ডেকেছিলাম। আমরা ধৈর্য ধরে তাদের কথাগুলো শুনেছি। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। তারা আমাদের কথা শুনেছে। আমরা একটা সুন্দর আলোচনা করেছিলাম। তাদের ধন্যবাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরাই আমাদের কাছে এসে বললো, স্যার আমাদের হাতে আর নেই। বহিরাগত অনুপ্রবেশকারীরা এসে ঢুকলো।’

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা সবকিছুর দায়িত্ব নিয়েছিলাম। হলে যারা থাকবে, চলে যাবে তাদের সাথে আমাদের খুব চমৎকার আলোচনা হয়েছিল। হলগুলো খোলার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো এমনটিও আলোচনা হয়েছিল। তারপরে তারা (অনুপ্রবেশকারীরা) আমাদের পানি, ইলেকট্রিসিটি বন্ধ করে যখন সাইড থেকে ঢিল মারা শুরু করলো তখন দেখলাম আমাদের আর কোনও উপায় নেই। বাধ্য হয়ে আমরা এসএমএস পাঠাই। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে আমাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

এর আগে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রধান প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঁচ দাবি করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না মানলে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ কয়েকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে কয়েক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাজলা গেট এলাকায় আগে থেকেই অবস্থান নেওয়া পুলিশ, বিজিবি এবং র‌্যাবের সদস্যরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেন তারা।

 

 

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর