রাণীনগর প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা লাঞ্চিতের জের ধরে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। এতে জাকি আমিন টেমস্ (৪৫) নামে এক সহকারি শিক্ষক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে রাণীনগর থানায় পাল্টা-পাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
একটি মামলায় রাণীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ২৭ জন ও অপর মামলায় রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকসহ তিন জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে রাণীনগর থানা পুলিশ জাকির হোসেন (৩৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের জনৈক সহকারি শিক্ষিকা তার চাকুরীর কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোরশেদা বানুর সাথে মঙ্গলবার বিকেলে বাক বিতন্ডা হয়। এ সময় প্রধান শিক্ষিকার স্বামী জাকারিয়া আমিন জেমস্ চড়াও হয়ে ওই শিক্ষিকাকে লাঞ্চিত করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে শিক্ষিকার লোকজন এদিন সন্ধ্যায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোরশেদা বানুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারপিট ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়।
এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দেবর সহকারি শিক্ষক জাকি আমিন টেমস আহত হয়। আহত টেমসকে রাণীনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোরশেদা বানুর শ্বাশুড়ি জাহানারা বেগম বাদী হয়ে রাণীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলালসহ ১২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় নগদ দুই লক্ষ টাকাসহ স্বর্ণালংকার লুটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাণীনগর থানা পুলিশ জাকির হোসেন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত জাকির উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে।
অপর দিকে ওই রাতেই ভুক্তভোগী সহকারি শিক্ষিকা বাদী হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোরশেদা বানু, মোরশেদার স্বামী জাকারিয়া আমিন জেমস্ ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দেবর সহকারী শিক্ষক জাকি আমিন টেমস্কে আসামী করে বিদ্যালয়ে মারপিট ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষিকা বলেন, স্কুলের ফাইলে সকল শিক্ষকদের কাগজপত্র থাকলেও আমার কাগজপত্র নেই। আমি একাধীকবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার নিকট থেকে কাগজপত্র চেয়েও না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি। এরই জ্বের ধরে বাক বিতন্ডার এক পর্য়ায়ে আমাকে মারপিট ও শ্লীলতাহানী করেছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোরশেদা বানু বলেন, স্কুলে কথা কাটা-কাটি হয়েছে। মারপিটের কোন ঘটনা ঘটেনি। তার পরেও হেলাল চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও মারপিট করে টাকা স্বর্ণালংকার লুটপাট করেছে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি মো: জহুরুল হক বলেন, মঙ্গলবার রাতে উভয় পক্ষ থেকে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। জাকির হোসেন নামে একজনকে আটক করে বুধবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলা দুইটি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স/অ