নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার ভিত্তিক অভিযান নিয়ে স্থানীয় বেকারি মালিক সমিতির অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর শিল্পকলা মিলনায়তন সংলগ্ন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশী বাঁধার মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। পরে সরকারি এই সংস্থার অভিযানকে “অপরিকল্পিত ও সমন্বয়হীন” দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির রাজশাহী বিভাগীয় উপ পরিচালককে স্মারকলিপি দিয়েছেন বেকারি ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের প্যাড ব্যবহার করে বেকারি ও কনফেকশনারী মালিক সমিতির স্মারকলিপি প্রদান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, স্মারকলিপিতে বেকারি ও কনফেকশনারির মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম রেজা এবং উত্তরবঙ্গ বেকারি ও কনফেকশনারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী ছাড়াও রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের স্বাক্ষর রয়েছে। তবে বেকারি ব্যবসায়ীদের স্মারকলিপিতে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ শামসুদ্দিন করেননি। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ সেলিম জানান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কখনো কোনো অভিযান একা পরিচালনা করেন না। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার অভিযান পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযানের পূর্বে তাদেরকে জানানো হয়। তবে কমিটির অনেকেই অভিযানের সময় উপস্থিত থাকেন না। তবে পুলিশ বা র্যাবের উপস্থিতিতে বাজার অভিযান পরিচালিত হয়।
তিনি আরও জানান, কয়েকদিন থেকে রাজশাহীসহ গোটা দেশেই চিনি নিয়ে তুঘলকি কাণ্ড চলছে। তাই নিয়মিত বাজার মনিটরিং কার্যক্রমের আওতায় সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে রাজশাহীর সাহেববাজার বড় মসজিদ এলাকার চিনির গোডাউনে অভিযান চালানো হয়।
আলী আহমেদ নামের এক ব্যবসায়ীর দোকানে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেসা করা হয় তার দোকানে বা গুদামে চিনি আছে কি-না? এ সময় তারা জানায় তাদের সংগ্রহে কোনো চিনি নেই। এমনকি দোকানের মূল্য তালিকায় অন্য সকল পণ্যের দাম লেখা থাকলেও চিনির মূল্যের ঘর ফাঁকা ছিল। পরে ওই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের সাথে নিয়ে তাদের গুদামে অভিযান চালিয়ে দেখা যায় সেখানে ১৩৪ বস্তা চিনি মজুদ রয়েছে। আইন মেনেই ওই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয় এবং চিনি জব্দ করা হয়।
ব্যবসায়ীদের স্মারকলিপি ও অবস্থান কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি জানান, জনস্বার্থে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করে। এখানে চাপের কিছু নেই। ব্যবসায়ীদের এমন কর্মসূচির কারণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে প্রভাব পড়বে না বা থেমে যাবে না।
উল্লেখ্য, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন ১৯৫৬ নামে যে আইন আছে সেখানে উল্লেখ করা রয়েছে কে কি পরিমান পণ্য সংরক্ষণ করতে পারবে। এছাড়া খাদ্য অধিদপ্তর থেকে যে পরিমাণ অনুমতি নিয়ে ব্যবসায়ীরা পণ্য সংরক্ষণের বিধান রয়েছে। দেশের দুর্দিনে তা বিক্রি না করে লুকিয়ে রাখে এবং কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশি দামে ওই পণ্য বিক্রি করা হয়।
স/আর