রবিবার , ২৮ জুলাই ২০২৪ | ৮ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাজশাহীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আ.লীগের তৎপরতায় ব্যর্থ হয়েছে নাশকতা

Paris
জুলাই ২৮, ২০২৪ ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দেশজুড়ে চালানো নাশকতায় এখনো অস্থিরতা বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মাঝে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জ্বালাও-পোড়াও করা হলেও সেক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের ঘাটি বলে পরিচিত রাজশাহী ছিল অনেকটায় শান্ত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া ছাড়া শহরে তেমন কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি আন্দোলনকারী বা নেপথ্যে থাকা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এর অন্যতম কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থান।

এমনকি কোটা আন্দোলনকারীরা বার বার নগরীর জিরোপয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা দিলেও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাল্টা অবস্থান কর্মসূচিতে সেখানেও ব্যর্থ হন আন্দোলনকারীরা। ফলে আন্দোলনের নামে দৃর্বত্তরা রাজশাহী নগরীতে কোনো ধরনের সহিংসতায় মেতে উঠতে পারেনি। অথচ এর আগে ২০১৩ সাল থেকে দেশজুড়ে আন্দোলনের নামে যখনোই জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনা ঘটেছে, তখনোই রাজশাহী ছিল অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।

দলীয় সূত্র মতে, গত ১৫ জুন থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতা শুরু হয়। ওইদিন থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলায় এলাকার চারপাশ দখলে নেয় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর বাইরে রাজপথ দখলে নেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মূলত রাজশাহী সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে নগরীর আলুপট্টি ও সাহেববাজার এলাকার দখলে নেয় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাঁর নেতৃত্বে নগরীর আলুপট্টি মোড়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে ও সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে অবস্থান নেন দলীয় নেতাকর্মীরা। এমনকি দলের নেতাকর্মীরা। এতে শহরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা মাথাচাড়া দিতে পারেনি। ১৭ তারিখ সন্ধ্যার দিকে আন্দোলনকারী নগরীর দরিখরবোনাসহ কয়েকটি জায়গায় সহিংসতা চালানোর চেষ্টা করে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সেটিও ভুন্ডুল হয়ে যায়। পালিয়ে যায় আন্দোলনকারীরা।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকি কুমার ঘোষ বলেন, ‘রাজশাহী নগরী বার বার দখলের চেষ্টা করেছিল আন্দোলনকারীরা। কিন্তু আমরা মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে সেটি হতে দেয়নি। আমরা ১৬ তারিখ থেকেই মাঠে অবস্থান করেছি সার্বক্ষণিক সময়ে। এমনকি এ সঙ্কটকালীন সময়ে দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে দুটি গ্রুপকে নিয়ে একসঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র লিটন। এতে দলের নেতাকর্মীরা আরও চাঙ্গা হয়ে নিজেদের মধ্যেকার বিভেদ ভুলে সহিংসতারোধে মাঠে নামেন।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালানোর চেষ্টা করা হয়। ১৬ জুলাই কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগও করা হয়। পরের দিন ১৭ জুলাই অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে (ভিসি) গোলাম সাব্বির সাত্তারকে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পদক্ষেপের কারণে পিছু হঠতে বাধ্য হোন আন্দোলনকারীরা। প্রায় ৮ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পরে মুক্ত করা হয় ভিসি গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ ৩৫ জন ফ্যাকাল্টিকে।

সূত্র মতে, ওইদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ৩৫ জনকে প্রশাসনিক ব্লকে অবরুদ্ধ করে বাইরে থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ৪৫ মিনিটের সমন্বিত অভিযানে ভিসিকে উদ্ধার করা হয়। এসময় টিয়ার সেল এবং ফাঁকা রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।

পরের দিন বিকেলে বিএনপিকেও মাঠে দাঁড়াতে দেয়নি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় কণঠাসা পরে বিএনপি নেতাকর্মীরাও। ভাংচুর করা হয় বিএনপির পার্টি অফিসেও।

জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হেমায়তুল্লাহ বলেন, ‘রাজশাহীতেও ব্যাপক সহিংসতার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সহিংস আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক পদক্ষেপের কারণে সেসব তৎপরতা ভেস্তে গেছে।’

তিনি বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরা দেখে দেখে পরিকল্পনা কাজে লাগিয়েছি। যেখানেই তিন-চারজনের বেশি শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছে, সেখানেই পুলিশ অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি। ফলে রাবিতেও নাশকতার যে বড় ধরনের পরিকল্পনা ছিল, সেটিও ভেস্তে দেওয়া গেছে। এর বাইরে রাজশাহী শহরকেন্দ্রীক আরও কিচু পরিকল্পনা ছিল নাশকতাকারীদের। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানের কারণে সেটিও হতে দেওয়া হয়নি। যার ফলে রাজশাহীতে বড় ধরনের কোনো নাশতকা চালাতে পারেনি দুর্বত্তরা। তবে আমরা এখনো তৎপর রয়েছি। পরিকল্পনাকারীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর