সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই জগতের সব প্রাণী মহান আল্লাহর তাসবিহ পড়ে। আল্লাহ তাআলা তার প্রশংসায় তাসবিহ পড়াকে এত বেশি পছন্দ করেন যে, তিনি বান্দার জন্য আসমানের দরজা খুলে দেন। আর তাতে বান্দার সব আবেদন-নিবেদন বিনা বাঁধায় সরাসরি আল্লাহর দরবারে পৌছে যায়। এমন একটি তাসিবহ-এর বর্ণনাই ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর মুসনাদে তুলে ধরেছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে আমরা নামাজ পড়ছিলাম, সেই মুহূর্তে মানুষের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি বলে উঠল-
اَللهُ أكْبَرْ كَبِيْراً وَالْحَمْدُ للهِ كَثِيْراً وَسُبْحَانَ اللهِ بُكْرَةً وَأَصِيْلاً
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদুলিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতাও ওয়া আসিলা’
অর্থ : ‘আল্লাহ মহান, সর্বশ্রেষ্ঠ; সব প্রশংসা অধিকহারে আল্লাহর জন্য, আল্লাহর গুণ বর্ণনা সকাল-সন্ধ্যায়।’
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন- কে বলল এসব কথা?
তখন উপস্থিত জনতার মধ্য থেকে লোকটি বলল, আমি, হে আল্লাহর রাসুল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কথাটি আমাকে আশান্বিত করেছে। এ কথার কারণে আসমানের দরজাসমূহ খুলে গেছে।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কণ্ঠে এরূপ কথা শোনার পর থেকে আমি ওই বাক্যগুলো (কখনও) বলতে ছাড়িনি। (মুসনাদে আহমদ, মুসলিম, তাবরানি)
এ তাসবিহ পড়ার ফলে যদি মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য আসমানের দরজা খুলে দেন, তাতে মহান আল্লাহর অফুরন্ত রহমতের বারিধারায় সিক্ত হবে মুমিন। সে কারণেই মুমিন বান্দার উচিত সকাল-সন্ধ্যায় এ তাসবিহ বেশি বেশি পড়া। আল্লাহর কাছে দুনিয়া-পরকালের কল্যাণে বেশি বেশি প্রার্থনা করা।
রাসলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবেই তাঁর উম্মতকে শিখিয়েছেন আচার-আচরণ তথা জীবনাচরণ। শিখিয়েছেন উত্তম জীবন-যাপনের নিয়ম-কানুন। শিখিয়েছেন অধিক আমল লাভের জিকির, তাসবিহ ও উপায়।
হাদিসের নির্দেশনায় জিকির-আজকার করলে মহান আল্লাহ বান্দাকে দান করবেন অফুরন্ত রহমত বরকত মাগফেরাত নাজাত। মুক্ত করবেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যাবতীয় মহামারি থেকে। গোনাহমক্ত পরিশুদ্ধ জীবন লাভ করবেন মুমিন।
আল্লাহ তাআলা বান্দাহকে তাঁর জিকির-প্রশংসা করে সব ধরনের অন্যায়-অনাচার থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। দুর্যোগ ও মহামারি তেকে হেফাজত রাখুন। মানুষের নেক আমল, তাসবিহ-তাহলিলের মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে মহামারি মুক্ত করুন। আমিন।
সুত্রঃ জাগো নিউজ