সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগে মিয়ানমারের আসিয়ান সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন মালয়েশিয়া সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ওপর ‘জাতিগত নিধন’ চালাচ্ছে বলে জাতিসংঘ যে অভিযোগ করেছে, সেই অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
বুধবার মালয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড মালায়াস ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের বার্ষিক সভায় যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী খাইরি জামালউদ্দিন বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানে মিয়ানমারের সদস্যপদ অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, ‘আসিয়ানে মিয়ানমারের সদস্যপদ পুনর্বিবেচনা করার জন্য, এই জোটের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি।’ জামালউদ্দিন দাবি করেন, ‘আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো কারও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি অনুসরন করে। কিন্তু সেই নীতি বাতিল হয়ে যায়, যখন কোনও সদস্যরাষ্ট্র ব্যাপক মাত্রায় জাতিগত নির্মূলীকরণে জড়িত হয়।’
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাক মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে অনুষ্ঠেয় সমাবেশে অংশ নেবেন। এর আগে দেশটির মন্ত্রিসভা গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছিল। গত শুক্রবার মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেও রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল।
রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর জাতিগত নিধনযজ্ঞের ঘটনায় মিয়ানমার সফরে রয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। তিনদিনের সফরে মঙ্গলবার তিনি দেশটির উদ্দেশে যাত্রা করেন। এ সফরে তিনি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যও পরিদর্শন করবেন। এ সফরে রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চতর কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতিসংঘের সাবেক এ মহাসচিব।
রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নির্যাতনের ঘটনায় মঙ্গলবার মিয়ানমার সফরে গেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। তিনদিনের সফরে তিনি দেশটির উদ্দেশে যাত্রা করেন। এ সফরে তিনি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যও পরিদর্শন করবেন। এ সফরে রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চতর কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতিসংঘের সাবেক এ মহাসচিব।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিষয়ক কমিশনের দায়িত্ব পাওয়ার পর দেশটিতে এটা তার দ্বিতীয় সফর। এর আগে অব্যাহত রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনায় গত সেপ্টেম্বরে দেশটি সফর করেন কফি আনান। গত ১৬ নভেম্বর এক বিবৃতিতে কফি আনান রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ জানান।
এদিকে, মিয়ানমারের সেনাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, গণধর্ষণের মতো বর্বরোচিত অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ জানিয়েছে, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের বহু গ্রাম। চলমান সহিংসতায় শুধু বাংলাদেশেই আশ্রয় নিয়েছেন কমপক্ষে ১০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। এদিকে দেশটিতে অব্যাহত রোহিঙ্গা নির্যাতন ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’র শামিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা। মঙ্গলবার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সুপারিশ অনুযায়ী কাজ করতে মিয়ানমার সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন