সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রেওয়া এলাকায় ৯ বছর বয়সী এক মেয়ে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। আর রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন ওই শিশুটির ভাই; যার বয়স ১৪ বছর।
মধ্যপ্রদেশ পুলিশ বলছে, মেয়েটির কিশোর ভাই মোবাইল ফোনে পর্ন ভিডিও দেখার পর তাকে যৌন নির্যাতন করে। এরপর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে তাদের মা ও বড় দুই বোন ২৪ এপ্রিলের ভয়াবহ এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই কিশোরকে সহায়তা করে বলে তদন্তে জানা গেছে।
মধ্যপ্রদেশের পুলিশ সুপার বিবেক সিং বলেন, গত ২৪ এপ্রিল জাওয়া থানার আওতাধীন এলাকায় ৯ বছর বয়সী একটি মেয়েকে ধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পুলিশ এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার মেয়েটির মরদেহ তার বাড়ির উঠানে পাওয়া যায়। ঘটনার সময় শিশুটি ঘুমিয়ে ছিল।
পরে ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোর, তার মা এবং বড় দুই বোনকে কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে কিশোরকে সহায়তা করার কথা স্বীকার করেন। ওই কিশোরের বড় দুই বোনের বয়স যথাক্রমে ১৭ ও ১৮ বছর।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ওই রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির পাশে ঘুমিয়েছিল কিশোর। রাতের কোনও এক সময় সে তার মোবাইল ফোনে পর্ন দেখার পর তাকে ধর্ষণ করে। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, মেয়েটি ধর্ষণের ঘটনা বাবা-মাকে জানাবেন বলে হুমকি দেওয়ায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কিশোর।
বিবেক সিং বলেন, পরে সে তার মাকে ঘুম থেকে তুলে ঘটনাটি জানায়। সেই সময়ও মেয়েটি জীবিত ছিল। পরে মায়ের সামনে বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ওই কিশোর। ততক্ষণে ঘুম থেকে জেগে উঠে তার দুই বোন তদন্ত কাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য বিছানার দাগ মুছে ফেলে।
তিনি বলেন, অভিযুক্ত কিশোর ও তার পরিবারের সদস্যদের আটকের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টায় পরিবারের সদস্যরা মেয়েটিকে বিষাক্ত পোকা কামড় দিয়েছে বলে দাবি করেন।
পরে তারা বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কাছে মরদেহ নিয়ে যান। সেখানে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় তারা সরকারি এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে মেয়েটির মরদেহ নিয়ে যান। আর এই চিকিৎসক মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন।
পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনার দিন ওই বাড়িতে কারও প্রবেশের কোনও আলামত খুঁজে পায়নি। এমনকি পরিবারও জানায়, বাড়িতে তারাও কারও প্রবেশের শব্দ শুনতে পায়নি। প্রযুক্তিগত প্রমাণ সংগ্রহ ও ৫০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশ পরিবারের সদস্যদের বক্তব্যে বারবার পরিবর্তন দেখতে পায়। সন্দেহের ভিত্তিতে তাদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে শেষ পর্যন্ত অপরাধের কথা স্বীকার করে ওই কিশোর ও তার পরিবার, বলেন বিবেক সিং।