সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ নেশনের প্রকাশক ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
ব্যারিস্টার মইনুলের জুনিয়র ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিজ তার সিনিয়রের মারা যাওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ব্যারিস্টার মইনুল। শনিবার সন্ধ্যা ৬টার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ২০০৭ সালে গঠিত ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। এ সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যারিস্টার মইনুল বিখ্যাত সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার বড় ছেলে। তিনি ১৯৬১ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপর লন্ডনের মিডল টেম্পলে আইনবিষয়ক পড়ালেখা করেন ব্যারিস্টার মইনুল। তিনি ১৯৬৫ সালে ব্যারিস্টার-ইন-ল ডিগ্রি অর্জন করেন।
ব্যারিস্টার মইনুল ১৯৭৩ সালে পিরোজপুর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের মাধ্যমে ‘বাকশাল’ গঠন করে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার প্রচলন করলে ব্যারিস্টার মইনুল এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের পরিচালিত দল ডেমোক্র্যাটিক লীগে যোগ দেন ব্যারিস্টার মইনুল। ওই বছরের ৩ নভেম্বর মোশতাক সরকারের পতন পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটিক লীগেই ছিলেন তিনি।
রাজধানীর বারিধারা জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা, এরপর আজিমপুর কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
নির্ভীক সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ১৯৪০ সালের জানুয়ারি মাসে পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ছাত্রজীবনে স্কাউট আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করে ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন যান এবং মিডল টেম্পল-ইন এ ভর্তি হন। সেখান থেকে ফিরে এসে ১৯৬৫ সালে তিনি হাইকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন।
ব্যারিস্টার মইনুল সংবাদ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। ২০০০-২০০১ মেয়াদে তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেন।