শনিবার , ৯ নভেম্বর ২০২৪ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বিশ্বজিৎ দাস হত্যা: মৃত্যুর আগে বিচার দেখে যেতে চান বাবা-মা

Paris
নভেম্বর ৯, ২০২৪ ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

ঘরের ভেতর টানানো রয়েছে বিশ্বজিৎ দাসের অনেক ছবি। ছবির মতোই মানুষটাও এখন শুধুই স্মৃতি। ছেলে আর বাড়ি ফিরবে না। তবু ছেলের জন্য দীর্ঘ এক যুগ ধরে চোখের জল ফেলে চলেছেন মা কল্পনা দাস।

সেদিন প্রকাশ্যে বিশ্বজিত্কে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে নিষদ্ধি ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনার এক যুগ পার হলেও বিচার হয়নি এখনো। বাবা-মার আকুতি, অন্তত মৃত্যুর আগে ছেলের হত্যাকারীদের বিচার যেন দেখে যেতে পারেন।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মশুরা এলাকার অনন্ত দাস ও কল্পনা দাসের ছোট ছেলে বিশ্বজিৎ।

সরেজমিন বিশ্বজিৎ দাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে থাকা ছেলের ছবির দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে আছেন মা কল্পনা। কিছুক্ষণ পর ছেলের একটি ছবি নামিয়ে পরম যত্নে আঁচল দিয়ে পরিষ্কার করছেন। ছেলের কথা মনে পড়তেই ফুপিয়ে কেঁদে উঠছেন। কাঁদছেন বিশ্বজিতের বাবা অনন্তও।

কল্পনা বলেন, আমার বিশ্ব (বিশ্বজিৎ) তো কখনো রাজনীতি করেনি। আমার ছেলে কাজ করে সংসার চালাত। ছেলেকে জগন্নাথের ছাত্রলীগের পোলাপাইন মেরে ফেলল। আজ ১২ বছর হয়ে গেল অপরাধীদের বিচার হলো না। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমরা বিচার চাইতে চাইতে ক্লান্ত। আমার বিশ্ব হত্যার বিচার চাই। অনন্ত বলেন, এই সরকারের আমলে আমার ছেলে হত্যার বিচার যেন দেখে যেতে পারি। তাহলে মরে গেলেও অন্তত আত্মা শান্তি পাবে।

মানবাধিকার কমিশন শরীয়তপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান বলেন, প্রকাশ্যে তাকে কারা হত্যা করে তা আমরা জানি। তারা স্বৈরাচার সরকারের দোসর ছিল। তাই তারা অতি দ্রুত আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা চাই অতি দ্রুত সব অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করা হোক।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ছোটবেলা থেকে ঢাকার শাঁখারী বাজারে ভাইয়ের দোকানে দর্জির কাজ শিখেছিলেন বিশ্বজিৎ। এরপর ভাইয়ের পাশাপাশি নিজেও ধরেছিলেন সংসারের হাল। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে শিবির সন্দেহে ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিশ্বজিত্ দাসকে।

এ ঘটনায় নাম উঠে আসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, মীর নূরে আলম লিমন, শাকিলসহ বেশ কয়েকজনের। যারা সবাই নিষদ্ধি ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। বিশ্বজিৎ হত্যায় ঢাকার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালের রায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল। যদিও পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামির মধ্যে ছয়জনেরই সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। আর দুজনের ফাঁসির আদেশ হলেও কার্যকর হয়নি দীর্ঘ ১২ বছরে।

 

সূত্র: যুগান্তর