রবিবার , ২৮ আগস্ট ২০১৬ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই পদ্মার পানি: ভয়ঙ্কর রুপ নিতে পারে যে কোনো সময়

Paris
আগস্ট ২৮, ২০১৬ ৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই অবস্থা বিরাজ করছে। আজ রবিবার সকালে বিপৎসীমার আরো কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। এ অবস্থায় যে কোনা মুহূর্তে পদ্মা ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করতে পারে বলে তীরবর্তি মানুষরা আশঙ্কা করছেন।

 

  • এদিকে ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেওয়ায় পদ্মায় পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজশাহীতে একের পর এক এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। শনিবার বিকেল ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় বিপৎসীমার আরো কাছে এসে পৌঁছেছে পদ্মার পানি।

 

রাজশাহীতে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় পদ্মায় বিপৎসীমার মাত্র ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে। কিন্তু সেটি এখন মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

আর গত ৬ দিনে পদ্মায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১১ সেন্টিমিটার হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হারে পানি বৃদ্ধি পেলে রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধসহ জেলায় বিভিন্ন স্থানে পদ্মার অস্থায়ী বাঁধ ধসে  যাওয়ার পাশাপাশি বড় ধরনের বন্যা হতে পারে বলেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

14089042_949616021831477_5792110120647869480_n
এরই মধ্যে রাজশাহী শহর এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও রাজশাহী শহররক্ষা বাধ চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। জেলার পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের তিনটি চর এলাকা,  গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের অন্তত ৬০ ভাগ, বাঘার চক রাজাপুর ইউনিয়নের পুরো এলাকা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।

 

  • রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ লিডার শহিদুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে জানান, শুক্রবার বিকেল ৬টা থেকে শনিবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ সেন্টিমিটার। এ সময় পদ্মায় পানি প্রবাহের মাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। যা আগের দিন শুক্রবার বিকেল ৬টায় ছিল ১৮ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। সেটি গতকাল সকালে এসে ১৮ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার এবং বিকেল ৬টায় গিয়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার।

 

আবার শনিবার বিকেল ৬টায় পদ্মায় যেখানে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৪০ সিন্টিমিটার, সেটি আজ সকালে বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার।

এর ফলে রাজশাহীতে পদ্মায় বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার থেকে মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

 

  • প্রসঙ্গত, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে পদ্মায় ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেইসঙ্গে বাড়তে থাকে একের পর এক এলাকায় বন্যার মাত্রাও।

 

বন্যা কবলিত এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব এলাকার লোকজন নিজেদের শেষ সম্বলসহ গরু-ছাগল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁকে ছুটে বেড়াচ্ছেন। পানিবন্দি হয়ে পড়া মানুষদের মাঝে খাবারসহ বিষুদ্ধ পানিরও শঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রাজশাহীর বাঘার চক রাজাপুর ইউনিয়নের চরম শঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে গতকাল শনিবার পর্যন্ত বানভাসি ওই ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার মানুষের অনেকের কাছেই ত্রাণ সুবিধা পৌঁছেনি বলেও খবর পাওয়া গেছে।

 

  • এদিকে এভাবে পানি বৃদ্ধির পরিমাণ অব্যাহত থাকলে আজকালের মধ্যেই পদ্মার পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যাবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে করে আরো হুমকির মধ্যে পড়তে পারে রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধসহ পেজলার বিভিন্ন স্থানের অস্থায়ী বাঁধগুলো। আর এসব বাঁধ ধসে গেলে গোটা রাজশাহীতেও বড় ধরনের বন্যা দেখা দিতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছেন পদ্মা তীরবর্তি মানুষরা।

 

নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার বাসীন্দা আব্দুল কাদের বলেন, ‘হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে আমাদের এলাকার শতাধিক বাড়ি-ঘর পানিতে ডুবে গেছে। উপায়ন্তর না দেখে ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে বাঁধের ওপরে আশ্রয় নিয়েছি।’ একই অবস্থা নগরীর গুড়িপাড়া, তালাইমারী এলাকাতেও গিয়ে দেখা গেছে।
নগরীর তালাইমারী এলাকার বাসীন্দা আসগর আলী বলেন, ‘যেভাবে পানি বাড়ছে-তাতে কখন বলে যে বাঁধ ভেঙে শহর তলিয়ে যাবে তার ঠিক নাই।

 

  • এভাবে আর কয়েকদিন পানি বাড়তে থাকলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনোভাবেই পদ্মার পানি ঠেকাতে পারবে না। তখন বাঁধ ভেঙে শহর তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জেলাতেও বড় ধরনের বন্যা দেখা দিতে পারে।’

 
জেলার বাঘা উপজেলার চর রাজাপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে বলে দাবি করে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বানভাসি মানুষদের দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শনিবার কিছু ত্রাণ সরবার করা হয়েছে। তবে সেটি অপ্রতুল। প্রায় ১০ মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা আরো ব্যাপক হারে না পৌঁছালে এলাকার মানুষরা চরম কষ্টের মধ্যে পড়বেন বলেও দাবি করেন তিনি।

 
রাজশাহীর পবা উপজেলার হিরয়ান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, ‘নতুন করে বন্যা দেখা দেওয়ার পরে চর এলাকার মানুষদের কাছে এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেনি। তবে আশা করা হচ্ছে দ্রতই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বানভাসি মানুষদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাবে। আর তা না পৌঁছালে ওপারের মানুষদের মাঝে আরো দুর্ভোগ নেমে আসবে।’

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর