সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
নীলফামারীতে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর এ পরিস্থিতি দেখা যায়। নদীর পানি নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করা কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, শনিবার সকাল ৯টায় নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং দুপুর ১২টায় ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়।
এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টায় ৩৯ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ৩৫ সেন্টিমিটার এবং বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শুক্রবার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্ট এলাকায় ১৩৯ মিলিমিটার এবং শনিবার ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এ পরিস্থিতিতে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে।
এসব গ্রামের পাঁচ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘পানি বাড়ার সঙ্গে আমার ইউনিয়নের পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড়সিংহেশ্বর মৌজার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে ওই দুই মৌজার ১ হাজার ২০০ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। আরো পানি বাড়ার আশঙ্কায় এসব পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছে।
ডিমলার খালিশাচাপানী ইউপি সদস্য মো. রবিউল ইসলাম জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শনিবার ইউনিয়নের পূর্ব বাইশপুকুর ও পশ্চিম বাইশপুকুর গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পশ্চিম বাইশপুকুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক হরিপদ রায় বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে গ্রামের নিম্নাঞ্চলের দেড় হাজার বিঘা জমির আমন ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি না কমলে এসব জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, ‘তিন দিন ধরে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত এবং উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টার পর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। আমরা সতর্কাবস্থায় রয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত পূর্বের দিনের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে।’
সূত্র: কালের কণ্ঠ