টি-টোয়েন্টি বিশ্বাকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ বুধবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভ পর্বে প্রতিটি দল পাঁচটি করে ম্যাচ খেলবে। প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। এমনও হতে পারে কোনও দল তিনটি জিতেও শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনালে জায়গা পাবে না সমীকরণের নানা হিসেবে। অবশ্য এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কার সাথে হেরে বাংলাদেশ দল কিছুটা পিছিয়ে পড়া অবস্থায় আছে।
কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন আর জয়-পরাজয়ের হিসেব করছে না, তারা একটু ইতিবাচকতা খুঁজছে, এটা ফুটে উঠেছে ম্যাচের আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের কথায়। তিনি অনেক ‘যদি এবং কিন্তু’ ব্যবহার করে বলেছেন বাংলাদেশ ‘কিছু একটা’ করবে। ইংল্যান্ড আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের এক নম্বর দল, বাংলাদেশ আট নম্বর।
একবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের মূল পর্বে বাংলাদেশ মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে, তাও সেই ২০০৭ সালে, প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। লক্ষ্যণীয় বিষয়, গত ১৬ বছর ধরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট চলছে, কিন্তু বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড কখনো মুখোমুখি হয়নি। বাংলাদেশের লেগ স্পিনার নেই, ইংল্যান্ডে আছেন আদিল রশিদ। আদিল রশিদের নাম লিখে ইউটিউবে খোঁজ করলেই একটা ভিডিও দেখা যায়, যেখানে প্রায় লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে পড়া একটি বল তিনি ভিরাট কোহলিকে বোকা বানিয়ে অফ স্ট্যাম্পে টার্ন করিয়ে বোল্ড করেন।
এটি তার ট্রেডমার্ক ডেলিভারি। আদিল রশিদ বিশ্ব ক্রিকেটে নিয়মিত আলোচিত নাম নন, কিন্তু তিনি নিয়মিত তার কাজ করে যাচ্ছেন, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন। এই বিশ্বকাপও শুরু করেছেন তিনি একই সাথে অদ্ভূত ও দুর্দান্ত বোলিং ফিগার নিয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ২ রান দিয়ে তিনি চারটি উইকেট নিয়েছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫৫ রানে গুটিয়ে গেছে এদিন। আর বাংলাদেশের তিনজন পারফর্মার স্পিনার আছে, কিন্তু লেগ স্পিনার নেই। কখনোই বাংলাদেশের ক্রিকেটে কোনও বিশ্বমানের লেগস্পিনার খেলেননি।
লিয়াম লিভিংস্টোর ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি দলে অভিষেকের পর ২ ম্যাচ খেলে দল থেকে বাদ পড়ে ২০২১ সালে তিনি আবার ফেরেন ফিরেই নিজেকে বিশ্বের অন্যতম বিধ্বংসী টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মাত্র সাত ম্যাচে। ২৯ গড় ও ১৬৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছেন তিনি। যার মধ্যে আছে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৩ বলে ১০৩ রানের ইনিংস। তবে শুধু তিনি নন, ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি যথেষ্ট ভীতি জাগানিয়া, জেসন রয় ও জস বাটলারও মারকুটে।
এছাড়া আছেন সফল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ কাটানো মইন আলী, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এক নম্বর ব্যাটসম্যান দাউয়িদ মালান, জনি বেয়ারস্টো এবং ইয়ন মরগান। তবে পেস বোলিংয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে। এই ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে ফিরতে পারেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের বোলিং কোচ ওটিস গিবসন মনে করেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন মুস্তাফিজুর রহমান। তবে বাংলাদেশের সাইফুদ্দিন চোট পেয়েছেন, রুবেল হোসেন ফিরেছেন দলে।
ওদিকে ইংল্যান্ড মার্ক উডকে পাচ্ছে না চোটের কারণে। ২০১১ ও ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছে। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পক্ষে নেই। ক্যাচ মিস, অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা এবং কোচের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন- এসব নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।